ছবি: পিটিআই।
ডিসেম্বরে খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধি পাঁচ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। এ বার পাইকারি বাজারের মূল্যবৃদ্ধি সাত মাসের রেকর্ড ভাঙল।
পেঁয়াজ থেকে শুরু করে আনাজ ও খাদ্যদ্রব্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়াতেই বাজারের মূল্যবৃদ্ধির হার চড়ছে। আজ কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মৌনব্রত’ নিয়ে প্রশ্ন তোলায়, মোদী সরকার পেঁয়াজের দাম না-কমার জন্য রাজ্যগুলির দিকে আঙুল তুলেছে। কেন্দ্রীয় খাদ্য সরবরাহ ও উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানের অভিযোগ, পেঁয়াজের দাম কমাতে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে। কিন্তু ১৮,৫০০ টন বিদেশ থেকে চলে এলেও রাজ্যগুলি মাত্র ২,০০০ টন পেঁয়াজ ঘরে তুলেছে। ফলে পেঁয়াজ পচে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সোমবার সরকারি পরিসংখ্যানই জানিয়েছিল, ডিসেম্বরে খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ৭.৩৫ শতাংশে পৌঁছেছে। যা গত পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ। মঙ্গলবার সরকারি পরিসংখ্যান জানিয়েছে, ডিসেম্বরে পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ২.৫৯ শতাংশ ছুঁয়েছে। নভেম্বরেই মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ০.৫৮ শতাংশ। গত সাত মাসে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার এত বেশি হয়নি। খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হারের মতোই পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার পিছনেও মূল কারণ আনাজ থেকে ডাল, আটার মতো খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়ে যাওয়া।
আরও পড়ুন: নথিভুক্তি আবশ্যিক হচ্ছে সব ড্রোনেরই
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানুয়ারি মাসের বুলেটিনেই বলেছিল, ক্রমাগত চড়া বাজারদরের ফলে আর্থিক বৃদ্ধি ধাক্কা খেতে পারে। গরিব মানুষের প্রকৃত আয় কমে যাওয়ায় আর্থিক বৃদ্ধির সুফল সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রেও বাধা তৈরি হয়। কংগ্রেস আজ দাবি তুলেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অবিলম্বে তাঁর ‘মৌনব্রত’ ভেঙে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকুন। মূল্যবৃদ্ধি রুখতে প্রধানমন্ত্রী পথনির্দেশিকা তৈরি করুন। কংগ্রেসের দাবি, আগামী ৩০ থেকে ৬০ দিনের জন্য মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী কী করতে চাইছেন, তার রূপরেখা তৈরি করুন।
মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া, তার সঙ্গে হাজার হাজার মানুষের চাকরি যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী আজ অভিযোগ তুলেছেন, ‘‘কোমর ভেঙে দেওয়া বাজারদর, বেকারত্ব এবং জিডিপি কমে যাওয়ার ফলে আর্থিক জরুরি অবস্থার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আনাজ, ডাল, তেল, রান্নার গ্যাসের দাম গরিবের মুখ থেকে খাবার কেড়ে নিয়েছে। মোদীজি দেশবাসীর সংসারের বাজেট টুকরো টুকরো করে দিয়েছেন।’’
কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘মোদী ২০১৪-য় ক্ষমতায় আসার আগে বলেছিলেন, ‘অব কি বার মেহঙ্গাই পর মার’। এখন তিনি মৌনব্রত নিয়েছেন। সাধারণ মানুষ ডাল, আটা, পেঁয়াজ কিছুই কিনতে পারছেন না।’’ কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার ৫৫ টাকা কেজি দরে রাজ্যগুলিকে পেঁয়াজ দিতে রাজি হয়েছে। পরিবহণের খরচও বহন করতে রাজি। তা সত্ত্বেও অন্ধ্র, কেরল, তেলঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া কোনও রাজ্য পেঁয়াজ নিতে রাজি হয়নি। ডিসেম্বরে পেঁয়াজের দর কেজি প্রতি ১৭০ টাকা ছুঁয়েছিল। কেন্দ্র ৩৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির চুক্তি করেছে। ১৮,৫০০ টন চলে এসেছে। অধিকাংশ পেঁয়াজ পচে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।