ফাইল চিত্র।
উদয়পুর বনাম জয়পুর— চলতি মাসে কংগ্রেস ও বিজেপির সর্বভারতীয় পর্যায়ের বৈঠকের কেন্দ্রস্থল রাজস্থানের ওই দুই শহর।
কংগ্রেসের চিন্তন শিবির হওয়ার কথা উদয়পুরে আগামী ১৩-১৫ মে। উপস্থিত থাকবেন সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী-সহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। ওই সপ্তাহেই, ২০-২১ মে জয়পুরে বসবে পদ্মশিবিরের বৈঠক। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনগুলির প্রস্তুতির পাশাপাশি, আগামী লোকসভা নির্বাচন নিয়েও মরুরাজ্যে চর্চা করবেন দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল দু’টি।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, আগামী দিনের রাজনৈতিক অভিমুখ ঠিক করতে চিন্তন বৈঠক ডেকেছে এআইসিসি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, পাল্টা চালে ওই একই সপ্তাহে জয়পুরে পদাধিকারীদের নিয়ে বৈঠকে বসছে বিজেপি। উদয়পুরের পাল্টা কি জয়পুর? এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি বিজেপি নেতারা।
আগামী বছর রাজস্থানে ভোট। বিজেপির একটি সূত্রের মতে, কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানে আইনশৃঙ্খলা, বিশেষ করে নারী নির্যাতন ও গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনাকে সামনে এনে অশোক গহলৌত সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পদ্মশিবির। তাই জয়পুরকে বেছে নেওয়া হয়েছে। দলের লক্ষ্য হল, ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে ক্ষমতা দখল করে, সেখানে লোকসভা ভোটে ভাল ফল করা।
বিজেপি সূত্রে বলা হয়েছে, রাজস্থানের কংগ্রেস সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে প্রচার চালানো ওই বৈঠকের একটি উদ্দেশ্য। বৈঠকের আর একটি উদ্দেশ্য হল, এ বছরের শেষে নির্বাচন হতে চলা গুজরাত, হিমাচল প্রদেশে ক্ষমতা ধরে রাখতে দলের কৌশল, প্রচারের অভিমুখ ঠিক করা। দু’দিনের বৈঠকে দলীয় সভাপতি জে পি নড্ডা ছাড়াও অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহ, নিতিন গড়কড়ীর মতো প্রাক্তন সভাপতিরা থাকবেন। এ ছাড়া হাজির থাকার কথা দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, রাজ্য সভাপতিরাও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভার্চুয়াল ভাবে দলীয় কর্মীদের সামনে বক্তব্য রাখবেন বলে এখন পর্যন্ত ঠিক রয়েছে বলে বিজেপি সূত্রের খবর।
বিজেপির একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকের প্রথম দিন, ২০ মে প্রত্যেক রাজ্য কমিটি সংশ্লিষ্ট রাজ্যে দলের সাংগঠনিক কাজের ফিরিস্তি দেবে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বুথ পর্যায়ে কমিটি গঠনের কাজ কতটা এগিয়েছে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার কথা রয়েছে। পরের দিন মূলত দলের সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বৈঠকে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হবে গুজরাত, হিমাচল প্রদেশ নির্বাচনে। ওই দুই রাজ্যেই ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি।
পরের বছর বিধানসভা নির্বাচন কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় ও রাজস্থানে। যার মধ্যে কর্নাটক ও মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতা ধরে রাখতে নামবে বিজেপি। ফলে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া সামলে কী ভাবে ক্ষমতা ধরে রাখা যায় তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা। এ ছাড়াও মোদী সরকারের আট বছর পূর্তি উপলক্ষে সরকারে সাফল্য প্রচারের কৌশল নিয়েও আলোচনা হবে বৈঠকে।
বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘লোকসভার আগে ছয় থেকে সাতটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সেখানে সফল হতে পারলে, লোকসভার আগে সুবিধাজনক জায়গায় থাকবে দল। তাই ওই নির্বাচনগুলিতে কী ভাবে জয় নিশ্চিত সম্ভব, সেই কৌশল খুঁজতেই জয়পুরে বৈঠকের কথা ভাবা হয়েছে।’’