নয়াদিল্লিতে আফ্রিকার পড়ুয়াদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই।
রাজধানীর রাস্তায় গণপ্রহারে কঙ্গোর ছাত্র খুনের ঘটনাটির সঙ্গে জাতিবিদ্বেষের কোনও সম্পর্ক নেই বলে আফ্রিকান পড়ুয়াদের জানালেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
আজ আফ্রিকান ছাত্রছাত্রীদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দেখা করেন বিদেশমন্ত্রী। তিনি জানান, গত ২০ মে রাতে আক্রান্ত ওই বিদেশি ছাত্র মাসুন্দা অলিভারকে কয়েক জন ভারতীয়ই যে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন, তা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে। সাংবাদিক বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘ওঁদের বলেছি, এই ঘটনাকে আমরা মোটেও ছোট করে দেখছি না। এক জন মা হিসেবে আমি ওই ছাত্রের বাবা-মায়ের কষ্ট বুঝি। তবে এটি জাতিবিদ্বেষের ঘটনা নয়।’’ আফ্রিকান পড়ুয়াদের সমস্যার কথা শুনতে বিদেশ প্রতিমন্ত্রী এবং সচিব মেট্রো শহরগুলিতে সফর করবেন বলেও জানান তিনি।
আজই মরক্কোয় পৌঁছেছেন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি। বিমানে সাংবাদিক বৈঠকে বিদেশি ছাত্রের খুনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন তিনি। পাঁচ দিনের সফরে মরক্কো ছাড়াও উত্তর আফ্রিকার আরও একটি দেশ, তিউনিসিয়ায় যাবেন উপরাষ্ট্রপতি। গত বছরের ইন্দো-আফ্রিকান শীর্ষ বৈঠকের বিভিন্ন কূটনৈতিক প্রাপ্তিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই এই সফরের লক্ষ্য। কিন্তু গত ক’দিনে দিল্লিতে কঙ্গোর ওই ছাত্রের হত্যাকাণ্ড এবং নাইজেরিয়া, ক্যামেরুন, উগান্ডা, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো বিভিন্ন দেশের অন্তত ৬ জন ছাত্রছাত্রীর উপরে হামলার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই সফর অন্য তাৎপর্য পেয়েছে। উপরাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘যে কোনও হামলাই নিন্দনীয়। ওঁরা আমাদের অতিথি। যেখানে আইনশৃঙ্খলা এ ভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে, তখন আমাদের উচিত ওঁদের খেয়াল রাখা।’’ আফ্রিকান দেশগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে পূর্বতন ইউপিএ সরকার এবং বর্তমান এনডিএ সরকারের অবস্থান আলাদা নয় বলেও জানান উপরাষ্ট্রপতি।
কেন্দ্রীয় সরকারের ইতিবাচক বার্তায় কিছুটা অবশ্য কাজ হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের নির্দেশে রাস্তায় আগেই টহলদারি বাড়িয়েছিল দিল্লি পুলিশ। অলিভার-খুনে জড়িত সন্দেহে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার পরে ইতস্তত হামলার ঘটনায় ধরা হয়েছিল পাঁচ জনকে। আজ দিল্লি পুলিশের জালে পড়েছে আরও তিন জন। সকলেই মেহরৌলির বাসিন্দা। তবে দিল্লিতে ‘ওলা’ চালকের উপরে হামলার ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে রোয়ান্ডার এক তরুণীকে।
বিদেশ মন্ত্রকের আশ্বাসে অবশ্য যন্তর-মন্তরে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের কর্মসূচি থেকে সরে আসতে রাজি হয়েছে আফ্রিকান ছাত্রছাত্রীদের একটি সংগঠন। তবে এর মধ্যেই ভারতে আসা নাইজেরীয়দের ফেরত পাঠানোর দাবি তুলে কেন্দ্রের অস্বস্তি খানিক বাড়িয়েছেন গোয়ার বিজেপি সরকারের পর্যটনমন্ত্রী দিলীপ পারুলেকর। একটি ধর্ষণ মামলায় এক নাইজেরীয় যুবকের দিকে অভিযোগের আঙুল ওঠায় তিনি বলেছেন, ‘‘নাইজেরীয়রা এখানে পড়তে আসে। তার পর একটা এফআইআর বা মামলা করে এখানেই থেকে যেতে চায়। এদের ফেরত পাঠাতে কড়া আইন দরকার।’’