ছবি: সংগৃহীত।
রাহুল গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা বঢরার দিকে আঙুল উঠলে তাঁদের ‘আস্থাভাজন’-রা রুখে দাঁড়াচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু কংগ্রেসের সাংগঠনিক দুর্বলতা গাঁধী পরিবারের অনুগামীদেরও ভাবিয়ে তুলেছে। কংগ্রেস নেতৃত্বের সমালোচকদের মতো তাঁরাও মানছেন, দলের সংগঠনের অবস্থা খুবই দুর্বল। বিহারে কংগ্রেসের ভরাডুবির সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের উপনির্বাচনের ফলও তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।
বিহারে ভোটের ফলপ্রকাশের পরে কপিল সিব্বল কংগ্রেস নেতৃত্বের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলার পরে বুধবার পি চিদম্বরম বলেছিলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশ, গুজরাতের মতো রাজ্যে উপনির্বাচনের ফল কংগ্রেসের সাংগঠনিক দুর্বলতাও প্রকট করে দিয়েছে।’’ যা মানছেন বিহারের ভোটে কংগ্রেসের প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান অখিলেশ প্রসাদ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘আমি রাহুল গাঁধীকে জানাব, সংগঠনে দুর্বলতার মোকাবিলা করতে হবে। দলের মধ্যে দুর্বলতা রয়েছে। বিশেষত ব্লক ও জেলা স্তরে।’’ এ বিষয়ে আলোচনার জন্য তিনি রাহুলের কাছে সময় চেয়েছেন।
গাঁধী পরিবারের সমালোচকদের প্রশ্ন, বিহারে কংগ্রেসের সংগঠনের দুর্বলতা কি নতুন বিষয়? রাহুল এত দিন সে বিষয়ে কী করেছেন? প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বে। তিনি কেন দিল্লিতে বসে উত্তরপ্রদেশের কাজকর্ম চালানোর চেষ্টা করছেন? কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘শুনছিলাম, প্রিয়ঙ্কা লখনউকেই ঘাঁটি করবেন। লোদী রোডের বাংলো হাতছাড়া হওয়ার পরে তিনি হরিয়ানার গুরুগ্রামের ফ্ল্যাটে গিয়ে উঠেছেন। নয়ডায় থাকলেও তা খাতায়-কলমে উত্তরপ্রদেশের ঠিকানা বলা যেত। এর পর নয়াদিল্লির খান মার্কেটের সামনে বাড়ি ভাড়া নেবেন। খান মার্কেট থেকে কি আর লখনউয়ের তখত দখলের লড়াই করা যায়!’’
উত্তরপ্রদেশের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ৪টি আসনেই কংগ্রেস প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। একটি আসন, টুন্ডলায় কংগ্রেস প্রার্থীর মনোনয়নই খারিজ হয়ে গিয়েছে। বাকি ছ’টির মধ্যে দু’টি আসনে কংগ্রেস দ্বিতীয় স্থানে। ওই দু’টি আসন বাদ দিলে একমাত্র বুলন্দশহরে কংগ্রেস ৫ শতাংশের মতো ভোট পেয়েছে। কিন্তু সেখানেও নবগঠিত আজাদ সমাজ পার্টি কংগ্রেসের থেকে বেশি ভোট পেয়েছে। বাকি তিন আসনে কংগ্রেসের ভোট ২ শতাংশের আশেপাশে।
প্রিয়ঙ্কা উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব নিয়ে নতুন প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি তৈরি করেছেন। রাজ্য সভাপতি অজয় কুমার লাল্লু তাঁর পরম আস্থাভাজন। কংগ্রেস নেতারা মানছেন, লাল্লু সক্রিয়। কিন্তু গোটা রাজ্যে সেই সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না। কারণ, সংগঠনের দুর্বলতা। প্রিয়ঙ্কা ২০১৯-এর ডিসেম্বরে শেষ বার লখনউয়ে প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে গিয়েছিলেন। তার পরে এক বছর কাটতে চলেছে। এর মধ্যে মাত্র দু’বার তিনি উত্তরপ্রদেশের মাটিতে পা রেখেছেন। এক বার আজমগড়ে, আহত সিএএ-বিক্ষোভকারীকে দেখতে। অন্য বার হাথরসে নির্যাতিতা দলিত তরুণীর পরিবারে।