সচিন পাইলট। —ফাইল চিত্র
মধ্যপ্রদেশের পরে রাজস্থানেও কংগ্রেস সরকারের উপর সঙ্কটের ছায়া। রাজ্যসভা ভোটে প্রার্থী চয়ন-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে রাজস্থানের দুই নেতা মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলটের মধ্যে মতভেদ তৈরি হয়েছে। উদ্বিগ্ন কংগ্রেস সভাপতি সনিয়া গাঁধী পরিস্থিতির মোকাবিলায় গহলৌতকে দিল্লিতে তলব করেছেন।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, রাজ্যসভার আসন্ন নির্বাচনে রাজস্থান থেকে হিরে ব্যবসায়ী রাজীব অরোরাকে প্রার্থী করতে চান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নামের প্রস্তাব দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়েছেন তিনি। তবে ওই ব্যবসায়ীকে প্রার্থী করতে আপত্তি পাইলটের। তাঁর মতে, দলের কোনও নেতার বদলে ব্যবসায়ীকে প্রার্থী করলে কর্মীদের কাছে ভুল বার্তা যাবে। মধ্যপ্রদেশে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ও দলের প্রায় দু’ডজন বিধায়কের দলত্যাগের পরে রাজস্থানের শীর্ষ নেতৃত্বের এই সংঘাত কংগ্রেস হাইকমান্ডের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন সতর্ক ভাবে পদক্ষেপ করতে চাইছে তারা।
রাজস্থান বিধানসভায় মোট আসন ২০০টি। কংগ্রেস জয়ী হয়েছিল ১০০টি আসনে। পরে বিএসপির ৬ জন বিক্ষুব্ধ বিধায়ক কংগ্রেসে যোগ দেন। যা মেনে নিয়েছেন স্পিকার। রাষ্ট্রীয় লোক দলের ১ জন বিধায়ক শরিক হিসেবে থাকায় শাসক জোটের সঙ্গে রয়েছেন মোট ১০৭ জন বিধায়ক। তা ছাড়া, ছোট দল এবং নির্দল মিলিয়ে মোট ১২ জন বিধায়ক গহলৌত সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করছেন। অন্য দিকে, বিজেপির আসন সংখ্যা ৭২।
এআইসিসি নেতৃত্বের আশঙ্কা, রাজ্যস্থানে কংগ্রেসের সরকার ফেলার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন অমিত শাহেরা। সে ক্ষেত্রে বিধায়কদের মধ্যে ক্ষোভ থাকলে তা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করবে বিজেপি। পাশাপাশি, বেশ কিছু বিষয় নিয়ে নিজেদের সরকারের প্রতি বিধায়কদের ক্ষোভের খবরও পৌঁছে গিয়েছে হাইকমান্ডের কাছে। রাজস্থান কংগ্রেসের অনেক বিধায়কের ক্ষোভ, রাজ্য সরকার তাঁদের কথা শুনছে না, আমলাদের পরামর্শকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। পাশাপাশি, বারমেরে দলিত যুবকের উপর হামলা, কোটার সরকারি হাসপাতালে শিশুমৃত্যু-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিজেদের সরকারের বিরুদ্ধেই মুখ খুলেছেন পাইলট। এখন তিনি রাজস্থানে ‘শক্তিশালী সরকারের প্রয়োজনীয়তা’-র কথা তুলে ধরছেন। তার নেতৃত্বে কে, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি। পাইলটকে নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের।
নিজের রাজ্যে টানাপড়েনের মধ্যেই আজ সিন্ধিয়ার দলত্যাগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন গহলৌত। টুইটারে লিখেছেন, ‘‘মানুষের আস্থা আর আদর্শের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন সিন্ধিয়া। এই ধরনের মানুষেরা প্রমাণ করে, ক্ষমতা ছাড়া তাঁরা বেঁচে থাকতে পারেন না। যত তাড়াতাড়ি তাঁরা চলে যান, ততই মঙ্গল।’’