প্রতীকী ছবি
বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য ভারতের শিক্ষা ক্ষেত্রের দরজা খুলে দেওয়ার কথা গত কালই ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। এ দেশে যাতে তারা ক্যাম্পাস খুলতে আগ্রহী হয়, তার জন্য যাবতীয় সুবিধা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রয়েছে নতুন শিক্ষা নীতিতে।
বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রণ, পরিচালনা, পাঠ্যক্রম-সহ বিভিন্ন বিষয়ে দেশের অগ্রণী স্বশাসিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সমান সুবিধা দেওয়ার কথাও। কিন্তু তাতে পড়ুয়াদের প্রশ্ন, “এই কি তবে স্টাডি ইন ইন্ডিয়ার নমুনা?” এর হাত ধরে দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রের বিদেশিকরণ, বেসরকারিকরণ এবং বাণিজ্যকরণের দরজা হাট হবে বলে তাঁদের অভিযোগ। আশঙ্কা রয়েছে ফি বৃদ্ধিরও।
ছাত্র সংগঠন এআইএসএ, এসএফআই থেকে শুরু করে জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদ জেএনইউএসইউ— সকলেরই ক্ষোভ, ইউপিএ জমানায় বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস খোলার বিরোধিতা করেছিল বিরোধী বিজেপি। অথচ এখন তার পক্ষে জোরাল সওয়াল করছে তারা। বিস্তর প্রতিবাদ সত্ত্বেও বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে নতুন শিক্ষা নীতিতে।
একেবারে হালেই শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক বলেছেন, ফি বছর এ দেশ থেকে বাইরে পড়তে যান প্রায় ৭.৫ লক্ষ পড়ুয়া। এতে মেধা তো বাইরে যায়ই, সেই সঙ্গে চলে যায় বিপুল ডলারও। তাঁর দাবি, মোদী সরকার চায়, মেধাবী পড়ুয়ারা দেশেই উচ্চশিক্ষার পাঠ নিন। সেই সূত্রে প্রতিবাদী পড়ুয়াদের প্রশ্ন, বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় এখানে ক্যাম্পাস খুললে, তারা কি ফি-এর ডলার নিজেদের দেশে নিয়ে যাবে না? নাকি সরকার তাদের কাছে মোটা অঙ্কের কর পেলেই খুশি? তাঁদের কটাক্ষ, “আত্মনির্ভর ভারতে স্টাডি ইন ইন্ডিয়া মানে তা হলে ভারতের মাটিতে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া!”
কিন্তু হার্ভার্ড, কেমব্রিজের মতো বিশ্বের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় এ দেশে ক্যাম্পাস খুললে, তাতে শিক্ষার মান বাড়বে না?
পড়ুয়াদের বক্তব্য, উৎকর্ষের দিক থেকে ওই সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় স্বাগত। কিন্তু অনেক সময়েই দেখা যায়, অন্য দেশে খোলা ক্যাম্পাসে মূল ক্যাম্পাসের পড়াশোনার মান বজায় রাখে না তারা। বরং তাকে ব্যবহার করে চটজলদি রোজগারের উপযুক্ত পাঠ্যক্রম পড়াতে। তার উপরে যে পরিমাণে ফি নিতে দিলে এ দেশে তারা ক্যাম্পাস খুলবে, তার জেরে বেসরকারি শিক্ষার গড় ফি বেড়ে যাবে বলেও অনেকের আশঙ্কা। ছাত্র সংগঠনগুলির প্রশ্ন, “এমনিতেই সরকারি শিক্ষার পরিসর ছোট করে আনতে চায় এই সরকার। তাই তার উপরে ফি বৃদ্ধির এই সম্ভাবনা আশঙ্কার নয় কি?”