মঙ্গলবার দিল্লি বিধানসভায় এক দিনের বিশেষ অধিবেশনে অরবিন্দ কেজরীবাল। ছবি: পিটিআই
দিল্লির ক্রিকেট-দুর্নীতির তদন্তে কমিশন গঠনের প্রস্তাব বিধানসভাতেও মঞ্জুর করিয়ে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। দিল্লি ও জেলা ক্রিকেট সংস্থার (ডিডিসিএ) বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখতে এই কমিশনের মাথায় রাখা হয়েছে প্রাক্তন সলিসিটর জেনারেল গোপাল সুব্রহ্মণ্যমকে। যাঁর সঙ্গে এই দুর্নীতিতে নাম জড়ানো কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির তিক্ততা অনেক দিনের। কিন্তু সেই কমিশন গঠনের বৈধতাই এখন প্রশ্নের মুখে।
জেটলি আজ দাবি করেছেন, এই তদন্ত কমিশন গড়ার সাংবিধানিক এক্তিয়ারই নেই দিল্লি সরকারের। শুধু তিনি নন, সংবিধান বিশেষজ্ঞদের অনেকেও একই কথা বলেছেন। সুভাষ কাশ্যপ যেমন বলেন, দিল্লি আদতে পূর্ণ রাজ্যই নয়— একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। ফলে এ ধরনের কমিশন দিল্লি সরকার গড়তে পারে না। মুখ্যমন্ত্রী এ ধরনের কোনও কমিশন গড়তে চাইলে দিল্লির উপরাজ্যপালের অনুমতি প্রয়োজন। কারণ, উপরাজ্যপালের মাধ্যমে কেন্দ্র দিল্লির রাজ্যপাট চালায়। তাঁর দাবি, আদালতে কেউ চ্যালেঞ্জ করলেও কমিশনের বৈধতা খারিজ হয়ে যেতে পারে।
আইনজ্ঞদের সায় পাওয়ার পরে বিজেপি নেতৃত্ব এখন উপরাজ্যপালের কাছে দরবার করে কমিশনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করার কৌশল নিচ্ছেন। পাল্টা তোপ দেগে কেজরীবাল আজ বলেন, ‘‘অরুণ জেটলি এই কমিশন অবৈধ করে দেবেন বলেছেন। অনেক দিন ধরেই আমরা বলে আসছি, দিল্লি একটি অর্ধেক রাজ্য। কিন্তু কেন্দ্রের মোদী সরকার দিল্লিকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দিতে চাইছে না। কারণ, তারা ভয় পাচ্ছে। বিজেপি এখন উপরাজ্যপালের মাধ্যমে তদন্ত আটকাতে চাইছে।’’
তবে বিজেপির অভিযোগ, কমিশন গড়ে তাঁর সচিবের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ আড়াল করাই লক্ষ্য কেজরীবালের। যার জবাবে কেজরী-শিবির কেন্দ্রের একটি চিঠিকেই পাল্টা হাতিয়ার করছে। জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া
মন্ত্রকের সুপারিশে ডিডিসিএ নিয়ে তদন্তের জন্য দিল্লি সরকারকে অনুরোধ করেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কেজরীবালের প্রশ্ন, এক্তিয়ারের বাইরে হলে কেন্দ্র কী ভাবে এই অনুরোধ করেছিল? নাকি এখন কেন্দ্রের প্রভাবশালী মন্ত্রীর দিকেই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায়, অন্য সুর বিজেপির?
গত কাল আদালতে আম আদমি পার্টি তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন অরুণ জেটলি। তাতে রণে ভঙ্গ দেওয়া তো দূর, আজ বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে আরও এক ধাপ এগিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন কেজরীবাল। তাঁর দফতরে সিবিআই তল্লাশির কারণে আজ প্রধানমন্ত্রীরও ইস্তফা দাবি করেন তিনি। বলেন, ‘‘আমার দফতরে সিবিআইয়ের ব্যর্থ হানা ও তদন্তকারী সংস্থাকে বিপথে চালিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর উচিত ইস্তফা দেওয়া।’’