দিল্লি গেটে পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের খণ্ডয়ুদ্ধ। ছবি: পিটিআই।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে উত্তাল হয়ে উঠল দিল্লি। দিল্লি গেটের কাছে ভীম আর্মির প্রতিবাদ মিছিল আটকালে, পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায় বিক্ষোভকারীদের। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল এগোতে চাইলে, জলকামান দিয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ। এর পর বিক্ষোভকারীরা আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। একটি গাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন জ্বালিয়ে দেন তাঁরা। পাল্টা তাঁদের উপর পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলে অভিযোগ।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-র বিরুদ্ধে শুক্রবার দুপুর ২টো নাগাদ দিল্লির জামা মসজিদ থেকে ভীম আর্মির প্রতিবাদ মিছিল বার হয়। যন্তরমন্তর পর্যন্ত এই মিছিল যাওয়ার কথা। মিছিলের নেতৃত্ব দেন ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ। প্রথমে দিল্লির দরিয়াগঞ্জের কাছে মিছিল আটকানোর চেষ্টা করে পুলিশ। তার পর সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ইন্ডিয়া গেটের কাছে পুলিশের বিশাল বাহিনী ব্যারিকেড করে মিছিল আটকায়।
কিন্তু, সেই পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই বিক্ষোভকারীদের জলকামান দিয়ে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ। তাতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে যায়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোড়া শুরু হয়। পুলিশও পাল্টা লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়িতে ভাঙচুর চালান বিক্ষোভকারীরা। তাতে আগুনও জ্বালিয়ে দেন তাঁরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় র্যাফ। এই ঘটনায় ১১ জন বিক্ষোভকারী জখম হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে লাঠিচার্জের বিষয়টি সম্পূর্ন অস্বীকার করে দিল্লি পুলিশের মুখপাত্র সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ‘‘বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু লাঠিচার্জ বা কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া হয়নি।’’ দিল্লি পুলিশের কয়েকজন কর্মী জখম হয়েছেন এবং বিক্ষোভকারীদের কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিক্ষোভে জ্বলছে উত্তরপ্রদেশ, মৃত ৬, গুলি চালায়নি, দাবি পুলিশের
বিক্ষোভের জেরে ইতিমধ্যেই শুক্রবার সকাল থেকে রাজীব চক, প্রগতি ময়দান, খান মার্কেট-সহ দিল্লির ১৭টি মেট্রো স্টেশন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সিএএ-র প্রতিবাদে দিনভর উত্তরপ্রদেশেও আগুন জ্বলে বিভিন্ন জায়গায়। ফিরোজাবাদে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। সে সময় পুলিশের গুলিতে এক জনের মৃত্যুও হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়া এ দিন সকালে বুলন্দশহর, গোরক্ষপুর-সহ একাধিক জায়গায় পথে নামেন বিক্ষোভকারীরা। সেই সঙ্গে ব্যাপক ভাঙচুর চলে, উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে।