কে এস পুট্টাস্বামী।
বয়স ৯২। কানে শুনতে ভুল হয়। কিন্তু তাঁর সঙ্গে কথা বললেই বোঝা যায় মনটা এখনও তরতাজা। আইন নিয়ে পড়াশুনায় মেয়েরা কতখানি এগিয়ে গিয়েছে, আইন কলেজে ৪০% পড়ুয়াই মেয়ে, আদালতে কেমন সফল তারা, সে সব কথা বলতে বলতে উচ্ছ্বাস ঝরে পড়ে তাঁর গলায়।
তিনি কর্নাটক উচ্চ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কে এস পুট্টাস্বামী। ব্যক্তিপরিসর সুরক্ষিত রাখার অধিকার একটি মৌলিক অধিকার— এই মর্মে ২০১২-য় তিনিই প্রথম সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। গত পাঁচ বছরে মামলা কোন পথে এগিয়েছে, সব তাঁর নখদর্পণে। তাই শুক্রবার যখন সুপ্রিম কোর্টের নয় সদস্যের বেঞ্চ তাঁর আবেদনের পক্ষে রায় দিয়ে জানিয়েছে, ব্যক্তিপরিসরের অধিকার মৌলিক অধিকার, তিনি আপ্লুত। বলেছেন, ‘‘এটা মানুষের জয়।’’
ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এন বেঙ্কটাচালা দুঁদে আইনজীবী হিসেবেই পুট্টাস্বামীকে মনে রেখেছেন। বেঙ্কটাচালার কথায়, ষাট ও সত্তরের দশকে যানবাহন সংক্রান্ত মামলা লড়তেন পুট্টাস্বামী। বিচারপতি হন ১৯৭৯-এ। তার পর তাঁর সংস্পর্শে আসেন বেঙ্কটাচালা। কিছু দিন সহকর্মীও ছিলেন।
অবসরের পর একটি কাজে হায়দরাবাদ চলে গিয়েছিলেন পুট্টাস্বামী। বেঙ্গালুরুতে যখন ফেরেন, তখন আধার নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। সে সময়েই মামলা করেন তিনি। তাঁর দাবি ছিল, ব্যক্তিপরিসর সুরক্ষিত থাকার অধিকারটি যাতে ক্ষুণ্ণ না হয়, সে বিষয়টি সরকারের দেখা উচিত। পুট্টাস্বামীর ধারণা, আধার কার্ড সংক্রান্ত নিয়মগুলিকে এই রায় কিছুটা হলেও প্রভাবিত করবে। পুট্টাস্বামী নিজে আধারের কট্টর বিরোধী।