Sedition Law

Sedition Law: একযোগে সরব ভয়হীন বহু কণ্ঠ

রাষ্ট্রদ্রোহ আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আজ তার স্পষ্ট পর্যবেক্ষণ জানিয়ে দেওয়ার পরই যেন নির্ভয়ে এর বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠল গোটা দেশ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২১ ০৬:১০
Share:

রাষ্ট্রদ্রোহে অভিযুক্ত এবং জেল হেফাজতে মৃত স্ট্যান স্বামীর স্মরণসভা। —ফাইল চিত্র।

রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন স্তরে নিন্দা-সমালোচনা হচ্ছিলই। প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন ভুক্তভোগী ও তাঁদের ঘনিষ্ঠরা। কিন্তু রাষ্ট্রদ্রোহ আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আজ তার স্পষ্ট পর্যবেক্ষণ জানিয়ে দেওয়ার পরই যেন নির্ভয়ে এর বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠল গোটা দেশ। কেন্দ্রের শাসক শিবির বাদে দল-মত-পেশা নির্বিশেষে সব স্তরের মানুষ শীর্ষ আদালতের সঙ্গে এক সুরে ও একযোগে প্রশ্ন ছুড়ে দিল মোদী সরকারের উদ্দেশে। তা হল, ঔপনিবেশিক ব্রিটিশরা যে আইনে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী বা গোখলেদের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জেলে পুরত, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও কেন সেই আইন রেখে দেওয়া হয়েছে?

Advertisement

কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী টুইট করেছেন, “সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।” মোদী জমানায় যে এর ব্যাপক অপব্যবহার হচ্ছে, বিশেষ করে তা নিয়ে মুখ খোলেন অনেকে। কংগ্রেস নেতা জয়বীর শেরগিল টুইটে লেখেন, “২০১৪ সাল থেকে দেশে প্রতি বছর ২৮% করে বাড়ছে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা। বাক্স্বাধীনতা হত্যার সুপরিকল্পিত কৌশল এটি। গাঁধীজির স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতার নীতিকে হত্যা করতে ব্যবহার করা হচ্ছে আইনটি।”

তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র টুইটে উল্লেখ করেন, হরিয়ানায় বিজেপি নেতা তথা ডেপুটি স্পিকারের গাড়ির কাচ ভাঙার জন্য পুলিশ ১০০ জন কৃষকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেছে, আর সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন করছে কেন ওই তামাদি আইনটি এখনও রেখে দেওয়া হয়েছে। এটাই আয়রনিক।” ঔপনিবেশিক জমানার আইনটি রেখে দেওয়ার আদৌ প্রয়োজন আছে কি? কেন্দ্রের উদ্দেশে শীর্ষ আদালতের এই প্রশ্নের সঙ্গে পুরোপুরি সহমত স্বরাজ ইন্ডিয়ার সভাপতি যোগেন্দ্র যাদব। বলেছেন, “হ্যাঁ। এটাই প্রশ্ন। এটাই মূল বিষয়। কালই হরিয়ানার সিরসায় স্রেফ গাড়ির কাচ ভাঙার জন্য কৃষকদের রাষ্ট্রদ্রোহে অভিযুক্ত করা হয়েছে! এই সবের জন্যই আইনটি ব্যবহার হচ্ছে।”

Advertisement

মনমোহন সিংহ জমানায় আইনমন্ত্রী অশ্বিনী কুমারের কথায়, “হরিয়ানায় কৃষকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনাটা ভারতের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের অপমান। অবিলম্বে ওই অভিযোগ প্রত্যাহার করা উচিত সরকারের।”

সমাজকর্মী তথা আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেন, “বিরোধী কণ্ঠ রোধ করতে ঔপনিবেশিক আইনের অপব্যবহার নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য সুপ্রিম কোর্ট ও প্রধান বিচারপতিকে অভিনন্দন।”

অভিনেত্রী তথা শিবসেনা নেত্রী উর্মিলা মাতণ্ডকরের প্রশ্ন, “সুপ্রিম কোর্ট যেখানে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনকে ঔপনিবেশিক আখ্যা দিয়েছে, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও কি এটার প্রয়োজন আছে আমাদের?” প্রাক্তন সাংসদ তথা চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রীতীশ নন্দীর মন্তব্য, “ঠিক পয়েন্ট ধরেছে সুপ্রিম কোর্ট। কঠোর ভাবেই যা বলার বলেছে। আমরা ব্রিটিশ আমলের সব চিহ্ন মুছে ফেলতে চাই, কিন্তু সেই জমানার যে আইনে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জেলে পাঠানো হত, সেটি ছাড়তে চাই না!”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement