অনলাইনে চিনা জুয়া-চক্রের ফাঁদ দেশজুড়ে। গ্রাফিক: অসীম রায়চৌধুরী।
চিনা অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা জুয়াড়িদের। তার পরে চলছে অনলাইন জুয়ার রমরমা কারবার। আর সেই বেআইনি আর্থিক লেনদেনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পেটিএম-কে! শুক্রবার দিল্লি, গুরুগ্রাম, পুণে এবং মুম্বইয়ে বেটিং সিন্ডিকেটের ১৫টি ঠিকানায় হানাদারি পরে এমনটাই দাবি করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। হানাদারি থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চারটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মোট ৪৬ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা ‘ফ্রিজ’ করা হয়েছে বলে রবিবার ইডি জানিয়েছে।
বিভিন্ন কোম্পানির আড়ালে সংগঠিত চক্র জুয়ার কারবার চালাত বলে ইডির দাবি। পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছিল বিদেশ থেকে। এমনই একটি কোম্পানি ডকিপে টেকনোলজি প্রাইভেট লিমিটেডের দু’টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখে জানা গিয়েছে, গত বছর মোট ১,২৬৮ কোটি টাকা জমা পড়েছিল। তার মধ্যে ৩০০ কোটি টাকা পেটিএম পেমেন্ট গেটওয়ে মারফত এসেছিল। পেটিএম পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা হয়েছিল প্রায় ৬০০ কোটি টাকা।
ইডির তরফে হায়দরাবাদ পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখায় ডকিপে টেকনোলজি, লিঙ্কউন টেকনোলজি প্রাইভেট লিমিটেড-সহ কয়েকটি সংস্থার বিরুদ্ধে বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইনে (পিএমএলএ) এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে তিন অভিযুক্তকে চিহ্নিতও করা হয়েছে। এঁরা হলেন, চিনা নাগরিক ইয়ান হাও। ২৪ বছরের এই অভিযুক্ত বেজিং টুমরো পাওয়ার কোম্পানির ম্যানেজার পদে কর্মরত। ধীরাক সরকার এবং অঙ্কত কপূর নামে অন্য দুই অভিযুক্ত অর্থ পাচারে যুক্ত কোম্পানির কর্তা।
আরও কয়েকটি নাম তদন্তে উঠে এলেও তাঁরা আদতে কোম্পানিগুলির ‘ডামি’ পরিচালক বলে ইডির অনুমান। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে পেটিএম, রাজরপে, ক্যাশফ্রির মতো অনলাইন ওয়ালেটের মাধ্যমে অর্থ লেনদেনের উদ্দেশ্যেই ওই ভারতীয়দের ব্যবহার করা হয়েছিল। ইডির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ক্লাউডফেয়ারের মাধ্যমে বহু ওয়েহবসাইট বানিয়েছিলেন। তার সাহায্যে অনলাইনে অ্যাপ্লিকেশনে বেটিং করার প্রচার চালানো হত জুয়াড়িদের কাছে।
আরও পড়ুন: তিব্বতকে ‘দুর্ভেদ্য দুর্গ’ বানাতে মগজধোলাইয়ের বার্তা চিনফিংয়ের
ইডির একটি সূত্রের খবর, জুয়াড়িদের পরিচয় গোপন রাখার বিষয়ে বিশেষ সতর্ক এই চক্র। বিভিন্ন সিমকার্ড থেকে চিনা অ্যাপ ইনস্টল করে বেটিং চক্রের চাঁইয়েরা তা ‘ওয়াইফাই’ নেটওয়ার্ক দিয়ে চালাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ফোন নম্বর তাতে জড়িত। হোয়্যাটসঅ্যাপে গ্রুপ তৈরি করে শুধু নির্দিষ্ট অ্যাপের ঠিকানা দিয়েই গ্রুপ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। ফলে তথ্য পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়ছে।
আরও পড়ুন: পূর্ব মেদিনীপুরের পুকুরে তরাইয়ের কচ্ছপের বসত