নয়াদিল্লির উদ্বেগ বাড়িয়ে দিল বেজিং। তিন চিনা সাংবাদিককে দেশে ফেরত যেতে বলার ঘটনা যে তারা ভাল ভাবে নেয়নি তা সোমবার বুঝিয়ে দিল চিন। এমনকী, এর ফল যে মারাত্মক হবে সে বার্তাও দিয়ে রাখল তারা। তবে, পরিণতির সেই হুঁশিয়ারি সরকারি ভাবে জানায়নি বেজিং। সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা গ্লোবাল টাইমস-এর সম্পাদকীয়তে ওই সতর্কবার্তা প্রকাশিত হয়েছে।
বিষয়টিকে অপমানজনক হিসাবে বর্ণনা করে সেখানে লেখা হয়েছে, চিনের বাগড়া দেওয়ার কারণে পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠী (এনএসজি)-তে ভারত সদস্যপদ পায়নি। সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই ভারত তাদের তিন সাংবাদিকের ভিসার মেয়াদ না বাড়িয়ে দেশে ফেরত যেতে বলেছে। পাশাপাশি তাদের দাবি, এনএসজিতে সঙ্গত কারণেই চিন বাধ সেধেছিল। এর পরেই সেখানে লেখা হয়েছে, ভারত যদি সে ঘটনার প্রতিশোধ এ ভাবে নেবে বলে ঠিক করে থাকে তবে তার ফল মারাত্মক হবে।
পাক-অধিকৃত কাশ্মীর সীমান্তে চিন-পাক যৌথ সেনা মহড়া, এনএসজি-তে ভারতের সদস্যপদের বিরোধিতা করা, দক্ষিণ চিন সাগরে ভারতের জাহাজ চলাচলে আপত্তি করার মতো বিষয় নিয়ে চিনের সঙ্গে উত্তেজনা যখন তুঙ্গে, সেই রকম একটা সময়ে তিন চিনা সাংবাদিককে ভারত ছেড়ে চলে যেতে বলে কেন্দ্রীয় সরকার। চিনের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া-র ওই তিন সাংবাদিককে এ মাসের মধ্যেই দেশে ফিরে যেতে বলা হয়। তাঁদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। এমনকী, বিষয়টি নিয়ে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে জানানো হলেও কোনও প্রতিকার মেলেনি। এ বছরের গোড়ার দিকেই ওই তিন সাংবাদিকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। বিদেশ মন্ত্রক তখন তাঁদের জানায়, শীঘ্রই ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হবে। সেই সময় তাঁদের পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিয়ে বলা হয়, শহরের বাইরে না যেতে। কিন্তু গত ১৪ জুলাই ভিসার মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না বলে জানিয়ে তাঁদের দেশে ফিরে যেতে বলে মন্ত্রক।
যে তিন সাংবাদিককে চিনে ফিরে যেতে বলা হয়েছে, সেই উ কিয়াং, তাং লি এবং শি ইয়ংগাং চিনের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা সিনহুয়াতে কাজ করেন। প্রথম দু’জন দিল্লি ও মুম্বইয়ের ব্যুরো চিফ এবং তৃতীয় জন মুম্বই অফিসে কাজ করতেন। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এনএসজি-র সদস্যপদের জন্য চিনের অনুমোদন ভারতের কাছে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এমন সময়ে সাংবাদিকদের দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত যে অকারণ উত্তেজনা বাড়াবে তা জানাই ছিল। এখন চিন সেই পথেই হাঁটার ইঙ্গিত দিয়ে রাখল।
আরও খবর...