রাষ্ট্রপুঞ্জে পাকিস্তান-চিনের ‘সাইলেন্স প্রসিডওর’ প্রস্তাবে হস্তক্ষেপ করল জার্মানি ও আমেরিকা। —ফাইল চিত্র
তিন দিন আগেই পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জে হামলা হয়েছিল। হামলার পিছনে ভারতের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিল ইসলামাবাদ। তাতে সায় ছিল চিনেরও। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জে গিয়ে কার্যত মুখ পুড়ল বেজিং-ইসলামাবাদের। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তানের তৈরি খসড়া প্রস্তাব পেশ করেছিল চিন। কিন্তু ‘নীরব প্রক্রিয়া’য় আনা সেই প্রস্তাবে প্রথমে জার্মানি এবং পরে আমেরিকা হস্তক্ষেপ করায় প্রস্তাব পাশ নিয়েই জটিলতা তৈরি হয়েছে। কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, পাকিস্তান-চিনের প্রস্তাবে হস্তক্ষেপ করে কার্যত ভারতের পাশেই দাঁড়িয়েছে ওয়াশিংটন ও বার্লিন।
২৯ জুন পাক স্টক এক্সচেঞ্জে জঙ্গি হামলার পর পাক প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি দু’জনই ভারতের দিকে অভিযোগের তির ছুড়েছিলেন। এর পর রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে এই হামলা নিয়ে একটি নিন্দা-প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করে পাকিস্তান। সেই প্রস্তাব রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে পেশ করে চিন। প্রস্তাবের সারমর্ম ছিল, সন্ত্রাসবাদী হানার (পাক স্টক এক্সচেঞ্জে) চক্রান্তকারী, হামলাকারী, অর্থ সাহায্যকারী এবং পৃষ্ঠপোষকদের আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বিচারের কাঠগড়ায় তোলার জন্য সব সদস্যের সক্রিয় সহযোগিতা চায় পাকিস্তান। সব সদস্য দেশ যেন পাক সরকার ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে এ বিষয়ে সাহায্য করে।
‘সাইলেন্স প্রসিডিওর’ বা নীরব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পাকিস্তানের হয়ে এই প্রস্তাব নিরাপত্তা পরিষদে পেশ করে চিন। নির্ধারিত সময় দেওয়া হয় নিউইয়র্কের সময় অনুযায়ী ৩০ জুন বিকেল ৪টে। এই নীরব প্রক্রিয়ার অর্থ, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেউ আপত্তি না করলে প্রস্তাব সর্বসম্মত ভাবে সেই প্রস্তাব গৃহীত হবে। কিন্তু শেষ মূহুর্তে, নির্ধারিত সময়ের কয়েক মিনিট আগে তাতে হস্তক্ষেপ করে জার্মানি। ফলে সময়সীমা বাড়িয়ে করা হয় পরের দিন অর্থাৎ ১ জুলাই সকাল ১০টা। সেই সময়ের মধ্যে আবার শেষ মুহূর্তে এসে হস্তক্ষেপ করে আমেরিকা। ফলে সময় আরও বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন: চিনের বিরুদ্ধে এটা ‘ডিজিটাল স্ট্রাইক’, অ্যাপ নিষিদ্ধ করা নিয়ে বার্তা রবিশঙ্করের
আরও পড়ুন: বেজিংয়ের আগ্রাসী মনোভাবই কমিউনিস্ট পার্টির প্রকৃত স্বরূপ, মনে করেন ট্রাম্প
কূটনৈতিক শিবিরের ব্যাখ্যা, জার্মানি-আমেরিকার হস্তক্ষেপে দেরি হলেও হয়তো প্রস্তাব পাশ হয়ে যাবে। কিন্তু জার্মানি-আমেরিকার এই পদক্ষেপ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এক দিকে জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে মাঝেধ্যেই গোলাবর্ষণ করছে পাকিস্তান। অন্য দিকে গালওয়ান উপত্যকা ও প্যাংগং লেকে চিনা আগ্রাসন। ভারত-বিরোধী দুই প্রতিবেশীর প্রস্তাব পিছিয়ে দেওয়ার অর্থ কার্যত ভারতের অবস্থানকেই সমর্থন, মত কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।