গোপাল পারমার। ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদী বলেন এক। আর তাঁর দলের মধ্যে ওঠে অন্য সুর! নাবালিকা বিয়ে ঠেকানোর জন্য প্রধামন্ত্রী যখন ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন, ঠিক সে সময় উল্টো কথা বলে কার্যত মোদীকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিলেন মধ্যপ্রদেশের বিজেপি বিধাযক গোপাল পারমার। শনিবার এক অনুষ্ঠানে তাঁর দাবি, ‘‘লাভ জেহাদ ঠেকানোর জন্য শিশু বয়সেই মেয়েদের বিয়ে দেওয়া উচিত।’’
কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, ধর্মান্তরিত করার জন্যেই সংখ্যালঘু যুবকরা হিন্দু মেয়েদের বিয়ে করছে। এই কৌশলের নাম নাকি ‘লাভ জেহাদ’। কেরালায় এই ধরনের একটি অভিযোগ আদালত পর্যন্ত গড়ালেও, শেষ পর্ষন্ত তার সত্যতা প্রমাণ করা যায়নি। তবুও গেরুয়া শিবির যে তাদের বক্তব্য থেকে নড়ছে না, তা মধ্যপ্রদেশে আগর মালওয়া কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক গোপাল পারমারের কথা থেকে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। অবিকল নীতি পুলিশের ঢঙে তিনি বলেছেন, ‘‘ভাল মানুষ সেজে কেউ-কেউ স্কুল ছাত্রীদের টার্গেট করছে। এই বিপদ এড়ানোর জন্যেই মেয়েদের শিশু বয়েসে বিয়ে দিয়ে দিন।’’
কিন্তু অপ্রাপ্তবয়স্কদের বিয়ে ঠেকানোর জন্য প্রচারে তো কোটি কোটি টাকা খরচ করছে কেন্দ্র। তার পরেও যদি মন্ত্রী-বিধায়করা উল্টো সুরে বলেন, তবে তো সমাজের বিপদ! যদিও পারমারের মতো বিজেপি নেতারা এ সব কথা ভাবতেই রাজি নন। তাঁর যুক্তি, ‘‘আগেকার দিনে ছেলেমেয়েদের অল্পবয়সেই বিয়ে হয়ে যেত, নইলে তাদের বিয়ে ঠিক করে রাখা হত। ফলে তারা ভুলের ফাঁদে পা দিত না। কিন্তু এখন মেয়েদের সময় মতো বিয়ে না হওয়ায় বিপদ বাড়ছে।’’
আরও পড়ুন: পাক সেলামের জেরে ভোটমঞ্চে টিপু
আরও পড়ুন: দানা মাঝিই প্রেরণা! বিনা খরচে গরিবের শবদেহ পৌঁছে দিচ্ছেন ওঁরা
১৮ বছরের কম বয়সীদের বিয়ে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে পারমার ‘সামাজিক ব্যাধি’ বলে চিহ্নিত করেছেন। বাবা মায়েদের উদ্দেশ্যে তার পরামর্শ, ‘‘মেয়েরা যাতে লাভ জেহাদিদের খপ্পড়ে না পড়ে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।’’ মধ্যপ্রদেশের বিজেপি বিধায়ক গোপাল পারমারের নিশানায় যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, তা আর বলে দিতে হচ্ছে না। বিরোধীরা তাঁর বিরুদ্ধে সাম্পরদায়িক বিভাজনের অভিযোগ তুলেছেন। কিন্তু শাস্তি তো দূরের কথা। পারমারকে এখনও পর্যন্ত সতর্ক পর্যন্ত করেনি বিজেপি।