মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
পাঠক্রম পরিবর্তনের চেষ্টা ঘিরে শুরু হয়ে গেল রাজনৈতিক বিতর্ক। করোনা সংক্রমণের প্রেক্ষিতে স্কুল বন্ধ থাকায় পাঠক্রমের ভার কমানোর নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। আর নির্দেশ অনুযায়ী রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠক্রম থেকে যে সব বিষয় বাদ দিয়েছে সিবিএসই, তা নিয়েই দানা বেধেছে বিতর্ক। নাগরিকত্ব বা ধর্মনিরপেক্ষতার মতো বিষয় বাদ! বিস্ময় প্রকাশ করে টুইট করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
কোভিড সংক্রমণের জেরে যে হেতু মাসের পর মাস বন্ধ হয়ে রয়েছে স্কুলগুলি, সে হেতু পাঠক্রম শেষ করা সম্ভব হয়নি অনেক স্কুলের পক্ষেই। এই পরিস্থিতিতে পাঠক্রমের ভার লাঘব করা উচিত বলে মত দেশের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের। সিবিএসই-কে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিয়েছে মন্ত্রক। কিন্তু নির্দেশ পাওয়ার পরে সিবিএসই যে সব অংশ বাদ দিয়েছে একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠক্রম থেকে, তা নিয়েই বিস্ময় প্রকাশ করতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহল।
কী কী বাদ দেওয়া হয়েছে? যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা, ধর্মনিরপেক্ষতা, নাগরিকত্ব এবং জাতীয়তাবাদ— একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠক্রম থেকে এই অংশগুলি আপাতত বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার বলে যে বিভাগ রয়েছে, তারও অংশবিশেষ ছেঁটে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: লকডাউনে কড়াকড়ি কতটা, ধন্দ বাড়ালেন ফিরহাদ হাকিম
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র প্রতিবাদ করেছেন সিবিএসই-র এই সিদ্ধান্তের। এ দিন তিনি টুইটারে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিষয়টি নিয়ে। তিনি লিখেছেন, ‘‘কোভিড সঙ্কটে পাঠক্রমের ভার কমানোর নামে নাগরিকত্ব, যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং দেশভাগের মতো বিষয়কে কেন্দ্রীয় সরকার বাদ দিয়েছে জেনে বিস্মিত হচ্ছি।’’ মমতা আরও লিখেছেন, ‘‘আমরা এতে তীব্র আপত্তি জানাচ্ছি এবং ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, কোনও মূল্যেই যাতে এই গুরুতর বিষয়গুলি বাদ না যায়, তা নিশ্চিত করা হোক।’’
আরও পড়ুন: সেনামুক্ত হটস্প্রিং, গালওয়ানে কাল শেষ হবে সেনা অপসারণ
শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন, বিভিন্ন শিবিরই সিবিএসই-র এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করতে শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাতের অভিযোগ, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং নাগরিকত্ব ইস্যু নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে উত্তাল দেশের রাজনীতি। এমন এক পরিস্থিতিতে ঠিক এই বিষয়গুলিই কেন বাদ গেল রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠক্রম থেকে, বিভিন্ন শিবির প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে তা নিয়ে।