ছবি: পিটিআই।
সময় মতো সরকারি বার্তা না পৌঁছনোয় চন্দ্রযান-২ অভিযান ঘিরে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের (ইসরো) অনলাইন কুইজ় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতেই পারল না রাজ্যের অসংখ্য ছাত্রছাত্রী। এ রাজ্যের যে দু’জন পড়ুয়া ইসরোর কেন্দ্রে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে, তাদের এক জন প্রতিযোগিতার কথা জেনেছিল সিবিএসই বোর্ড থেকে।
চন্দ্রযান-২ অভিযানের ঐতিহাসিক মুহূর্তের সরাসরি সম্প্রচার বেঙ্গালুরু কেন্দ্রে দেখার সুযোগ ছাত্রছাত্রীদের দিতে অনলাইন কুইজ়ের প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল ইসরো। গোটা দেশ থেকে কুইজ়ে সফল ছাত্রছাত্রীরা শুক্রবার গভীর রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ইসরোর কেন্দ্রে তা দেখেছেন। প্রতিযোগিতার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারি ওয়েবসাইটে (quiz.mygov.in) আবেদনের সময়সীমা ছিল ১০ অগস্ট, মধ্যরাত ১২টা ০১ মিনিট থেকে ২৫ অগস্ট রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত।
‘পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশন’ সব জেলার শিক্ষা আধিকারিককে (ডিইও) ওই প্রতিযোগিতার কথা জানায় ২৭ অগস্ট (চিঠির মেমোঃ ৯৭ (২৪)/১১/পিবিএসএসএম/পিএলজি/২০১৯-২০)। অনলাইন প্রতিযোগিতা শুরুর দিনটির কথা জানানো হলেও, কত দিন তা চলবে তার উল্লেখ ছিল না।
সিউড়ি বেণীমাধব ইনস্টিটিউশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় সিংহ বলেন, ‘‘ইসরো-র কুইজ় সংক্রান্ত চিঠি আমি পাইনি।’’ নানুর ও পাড়ুইয়ের দুটি স্কুলের বিজ্ঞান শিক্ষক অরিজিৎ দাস ও বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘সীমিত সময়ের কারণে গ্রামীণ এলাকার বহু পড়ুয়া সুযোগ পায়নি।’’ সমগ্র শিক্ষা অভিযানের জেলা প্রকল্প আধিকারিক বাপ্পা গোস্বামীর কথায়, ‘‘খোঁজ নিতে হবে।’’ পূর্ব বর্ধমান জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শ্রীধর প্রামাণিক শনিবার বলেন, ‘‘আমরা কুইজ়ের কথা জানতাম না।’’ সমগ্র শিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক মৌলি সান্যালের কথায়, ‘‘খোঁজ নিতে হবে।’’ তবে পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের অন্তর্গত একাধিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানিয়েছেন, ‘ইসরো’র ওয়েবসাইট থেকে ওই পরীক্ষার কথা জেনে তাঁরা পড়ুয়াদের জানিয়েছিলেন।
পুরুলিয়া জেলা সমগ্র শিক্ষা মিশনের জেলা শিক্ষা আধিকারিক বিকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘ইসরোর কুইজ়ে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে চিঠিটি কিছুটা দেরিতে এলেও স্কুলগুলিতে দ্রুত জানাতে ই-মেল করেছিলাম।’’ বাঁকুড়া জেলা সমগ্র শিক্ষা মিশন দফতর থেকে জানানো হয়েছে, চিঠি দেরিতে এলেও স্কুলগুলিকে জানানো হয়েছিল। তমলুক হ্যামিলটন হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মধুসূদন জানা বলেন, ‘‘ইসরোর কুইজ় সংক্রান্ত একটি ই-মেল কাল (৬ সেপ্টেম্বর) পেয়েছি।’’ একই প্রতিক্রিয়া হুগলির বেশ কয়েকটি স্কুলেরও।
পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশনের রাজ্য প্রজেক্ট ডিরেক্টর তথা আইএএস অফিসার আর ভিমলা ফোনে কথা বলতে চাননি। গোটা বিষয়টির ব্যাখ্যা চেয়ে তাঁকে মোবাইল বার্তা পাঠানো হলেও, তার কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।
তথ্য সহায়তা: সৌমেন দত্ত, রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত পাল, আনন্দ মণ্ডল ও দয়াল সেনগুপ্ত