চন্দা কোচর।
প্রায় দু’হাজার কোটি টাকার অর্থ তছরূপে অভিযুক্ত চন্দা কোচরকে জামিন দিল আদালত। ৫ লক্ষ টাকার বন্ডে শুক্রবার মুম্বইয়ের একটি আদালত তাঁকে জামিন দিয়েছে। আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের এই প্রাক্তন সিইও-র বিরুদ্ধে অভিযাগ ছিল, তিনি নিজের পদের অপব্যবহার করে এবং ব্যক্তিগত লাভের বিনিময়ে একটি সংস্থাকে মোটা অঙ্কের ঋণের সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন। শুক্রবার এ সংক্রান্ত মামলাটিতে তাঁকে জামিন দিলেও মুম্বইয়ের আদালত জানিয়েছে, বিনা অনুমতিতে দেশ ছাড়তে পারবেন না কোচর।
২০২০-র শুরুতেই কোচরের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরূপের অভিযোগ দায়ের করেছিল ইডি। তার পর সেপ্টেম্বর মাসে একই মামলায় কোচরের স্বামী দীপক কোচরকে গ্রেফতার করা হয়। অবৈধ ভাবে ১৮৭৫ কোটি টাকার ঋণ পাইয়ে দেওয়ার মামলা হয় কোচর, তাঁর স্বামী দীপক এবং ভিডিয়োকন গ্রুপের বেণুগোপাল ধূতের বিরুদ্ধে। আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের তৎকালীন সিইও কোচর এই বেণুগোপালকেই ওই বিপুল অঙ্কের ঋণ পেতে সাহায্য করেন বলে অভিযোগ ছিল। তার বদলে ধূত কোচরের স্বামী দীপকের সংস্থা এনইউ পাওয়ারে অর্থ বিনিয়োগ করেন। পদের অপব্যবহার করে এবং ব্যক্তিগত সুবিধার বিনিময়ে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার এই ঘটনাতেই মামলা দায়ের হয় কোচরের বিরুদ্ধে।
কোচরের স্বামী অবশ্য এখনও জেলেই। গত ৩০ জানুয়ারি কোচর-সহ মামলায় জড়িত ৩ জনকেই সমন পাঠিয়েছিল মুম্বইয়ের অর্থ তছরূপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ)আদালত। শুক্রবার শুনানি ছিল মামলার। বিচারক নন্দগাঁওকর ইডির চার্জশিট প্রসঙ্গে বলেন, চন্দা কোচর যে তাঁর পদের অপব্যবহার করেছেন এই ঘটনায় তা স্পষ্ট। যদিও পরে ৫ লক্ষ টাকার বন্ডে চন্দাকে জামিন দেয় আদালত এই শর্তে যে, আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।
কোচর-সহ এই মামলায় অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধেই আলাদা তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো সিবিআই। কেন্দ্রীয় সংস্থার মামলার প্রেক্ষিতেই এই ঘটনায় কোচর, দীপক এবং ধূতের বিরুদ্ধে অর্থ তছরূপের মামলা দায়ের করে ইডি। এছাড়া ধূতের মালিকানাধীন ভিডিয়োকন গ্রুপের দু’টি সংস্থার বিরুদ্ধেও দায়ের হয় আর্থিক তছরূপের মামলা। সিবিআই জানিয়েছিল, কোচরের পাইয়ে দেওয়া ঋণের টাকা ধূত তাঁর একটি সংস্থা সুপ্রিম এনার্জির মাধ্যমে বিনিয়োগ করেন দীপকের সংস্থা এনইউ পাওয়ারে।
শুক্রবার চন্দার জামিন পাওয়ার ঘটনায় ইডি জানিয়েছে, কোচর আইসিআইসিআইয়ের দায়িত্বে থাকাকালীন আরও ২টি এমন অবৈধ ঋণ পাইয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সেগুলিও তদন্ত করে দেখছে তারা।