সিবিআইয়ের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় অসহযোগিতা করেছেন আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিইও এবং এমডি চন্দা কোছর ও তাঁর স্বামী দীপক কোছর। ছবি: সংগৃহীত।
৩,২৫০ কোটির ঋণ প্রতারণাকাণ্ডে ধৃত আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিইও এবংএমডি চন্দা কোছর ও তাঁর স্বামীকে ৩ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। শনিবার মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালতের তাঁদের হাজির করা হয়। সিবিআই এবং চন্দার আইনজীবীদের বক্তব্য শোনার পর বিশেষ আদালতের বিচারক এসএম মেনজোগের জানান, তদন্তের স্বার্থে ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জেরার প্রয়োজন রয়েছে। এর পর চন্দাদের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের আবেদন অনুযায়ী ৩ দিনের হেফাজত মঞ্জুর করেন।
২০১৮ সালের এই ঋণ প্রতারণাকাণ্ডের মামলায় শুক্রবার জিজ্ঞাসাবাদের পর চন্দা এবং তাঁর স্বামী দীপক কোছরকে গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটি। শনিবার আদালতে সিবিআইয়ের দাবি, সংক্ষিপ্ত জিজ্ঞাসাবাদের সময় সহযোগিতা করেননি চন্দারা। তাই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
চন্দার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১২ সালে বেণুগোপাল ধুতের ভিডিয়োকন গোষ্ঠীকে ৩,২৫০ কোটি টাকা ঋণ পাইয়ে দিতে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের অভ্যন্তরীণ নিয়মনীতি ভেঙেছিলেন সে সময় ওই ব্যাঙ্কের সিইও এবং এমজি চন্দা। অভিযোগ, এই প্রতারণাকাণ্ডে লাভবান হয়েছিলেন চন্দার স্বামী দীপক এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা। যদিও পরে ওই ঋণ অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত হয়। গোটা লেনদেনে সিবিআইয়ের এফআইআরের ভিত্তিতে চন্দা, দীপক-সহ বেণুগোপালের বিরুদ্ধে কালো টাকা লেনদেন প্রতিরোধ আইনে মামলা রুজু করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। পরে ইডির হাতে গ্রেফতারও হন দীপক।
শনিবার আদালতের সিবিআইয়ের আইনজীবী এ লিমুজ়িনের দাবি, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের শীর্ষপদে থাকাকালীন ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ৬টি ঋণে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন চন্দা। যেগুলিতে অনিয়ম ধরা পড়েছে এবং যা তদন্তের আওতায় রয়েছে। ওই ঋণ পাইয়ে দেওয়ার জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করে চাপ দিয়েছিলেন চন্দা।
এই মামলায় চন্দার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ যুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। তাঁর আরও দাবি, ১৫ ডিসেম্বর চন্দা এবং দীপককে তলব করা হলেও তদন্তকারীদের মুখোমুখি হননি তাঁরা। এর পরই সংক্ষিপ্ত জিজ্ঞাসাবাদের পর শুক্রবার তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
যদিও চন্দাদের আইনজীবী অমিত দেশাইয়ের পাল্টা দাবি, দীর্ঘ দিন আগে এই মামলা রুজু করা হলেও এত দিন তাঁদের তলব করেনি সিবিআই। অন্য দিকে, ওই ঋণের জেরে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের লোকসানও হয়নি। ফলে চন্দাদের গ্রেফতার করার কোনও কারণ নেই।
যদিও শেষমেশ সিবিআইয়ের আইনজীবীর আর্জিতেই সাড়া দিয়ে চন্দাদের হেফাজতে পাঠান বিচারক এসএম মেনজোগে।