প্রতীকী ছবি।
আগামী ১ জুলাই থেকে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের মহার্ঘভাতা বাড়তে চলেছে। মহার্ঘভাতা বা ডিএ ১৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৮ শতাংশে পৌঁছতে পারে। তবে আগের সিদ্ধান্ত মতোই কোনও রকম বকেয়া বা ‘এরিয়ার’ মিলবে না। নতুন মহার্ঘভাতা ১ জুলাই থেকেই কার্যকর হবে। কারণ, সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘোষণা মতো ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সকলের জন্যই রাজ্যকে বিনামূল্যে কোভিডের টিকা কিনে দিতে কেন্দ্রের অতিরিক্ত ১০ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। ৮০ কোটি মানুষকে দীপাবলি পর্যন্ত বিনামূল্যে বাড়তি রেশন জোগাতেও ১.১ থেকে ১.৩ লক্ষ কোটি টাকা খরচ হবে। সব মিলিয়ে টিকা ও রেশনের জন্য কেন্দ্রের বাড়তি খরচ ১.৪৫ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছে যেতে পারে। তবে কেন্দ্র সকলের টিকাকরণের দায়িত্ব নেওয়ায় ৩০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে রাজ্যগুলির।
গত বছর কোভিডের ধাক্কা ও দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণার পরেই কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বৃদ্ধি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। ২০১৯-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত ডিএ-র হার ছিল ১৭%। মার্চে কেন্দ্র ৪% ডিএ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়। যা ২০২০-র ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু লকডাউনে সরকারের রাজস্ব-আয় কমতে শুরু করায় এবং কোভিডের মোকাবিলায় অর্থের সংস্থানের জন্য এপ্রিলে নির্দেশিকা জারি হয়, ২০২১-এর জুন পর্যন্ত ডিএ বৃদ্ধি স্থগিত থাকবে।
সরকারি সূত্রের খবর, মূল্যবৃদ্ধির সূচক অনুযায়ী ২০২০-র জানুয়ারি থেকে জুন ৩%, জুলাই থেকে ডিসেম্বর ৪% ও ২০২১-এর জানুয়ারি থেকে জুনে ৪% ডিএ বাড়ার কথা। সেই অনুযায়ী ১ জুলাই থেকে অন্তত ১১% ডিএ বাড়বে। ৩০ জুন পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধির সূচকের অঙ্ক কষেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। নতুন ডিএ-র হার কার্যকর হবে ১ জুলাই থেকে।
বকেয়া-সহ বর্ধিত হারে ডিএ মিলবে বলে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে প্রত্যাশা তৈরি হলেও, কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের শীর্ষ সূত্রের বক্তব্য, “ডিএ বৃদ্ধি স্থগিত রাখার সময়ই বলে দেওয়া হয়েছিল, গত বছরের জানুয়ারি থেকে এ বছরের জুন পর্যন্ত তিন দফায় যে পরিমাণ ডিএ বাড়ার কথা, তা যোগ করেই নতুন ডিএ-র হার স্থির হবে। তবে কোনও ডিএ বাবদ কোনও বকেয়া দেওয়া হবে না। একই সঙ্গে সকলকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন, গরিবদের বিনামূল্যে রেশন এবং সরকারি কর্মচারীদের ডিএ-র বকেয়া মেটানো কেন্দ্রের পক্ষে সম্ভব নয়।”
সোমবারই প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, ২১ জুন থেকে ১৮-৪৪ বছর বয়সিদের টিকা জোগানের খরচও কেন্দ্র বহন করবে। বাজেটে টিকাকরণের জন্য ৩৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। অর্থ মন্ত্রকের হিসেব, নতুন নীতি অনুযায়ী টিকাকরণের খরচ বেড়ে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকায় চলে যাবে। কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিনের পাশাপাশি আগামী দিনে স্পুটনিক-ভি ও বায়োলজিকাল-ই ভ্যাকসিনও কেনা শুরু করবে কেন্দ্র। আজকেই ৪৪ কোটি কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন ডোজ়ের বরাত দেওয়া হয়েছে। ৩০ শতাংশ অগ্রিমও মঞ্জুর হয়েছে।
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের মন্তব্য, “কেন্দ্রের কাছে তো অর্থের অভাব নেই। বাজেটেই টিকার জন্য ৩৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। সেন্ট্রাল ভিস্টা সাজাতে প্রধানমন্ত্রী ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ করছেন। দুই মিলিয়েই ৫৫ হাজার কোটি টাকা রয়েছে।” অর্থ মন্ত্রকের যুক্তি, গত কাল প্রধানমন্ত্রী নভেম্বর পর্যন্ত ৮০ কোটি মানুষকে প্রতি মাসে মাথা পিছু ৫ কেজি করে চাল-গম বিনামূল্যে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তার জন্যও অন্তত ১.১ থেকে ১.৩ লক্ষ কোটি টাকা খরচ হবে।