প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্রের প্রস্তাব মেনে নিলেও জিএসটি ক্ষতিপূরণ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলির পাল্টা দাবিতে চাপে পড়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকারের অর্থ মন্ত্রক। জিএসটি থেকে আয়ের অভাব মেটাতে কেন্দ্রীয় সরকার যদি ১.১০ লক্ষ কোটি টাকা ধার করে রাজ্যকে ধার দিতে পারে, তা হলে বাকি ৭২ হাজার কোটি টাকা ধার দিতে অসুবিধা কোথায়— এ প্রশ্নের জবাব এখনও নির্মলা সীতারামনের অর্থ মন্ত্রকের কাছে নেই।
গত এক সপ্তাহে একে একে রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রের প্রস্তাব মেনে নিয়ে জানিয়েছে, জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটানোর বদলে বাজার থেকে ধার করে রাজ্যকে ধার দেওয়ার প্রস্তাবে তারা রাজি। লকডাউনের ফলে রাজ্যগুলির চলতি অর্থ বছরে ১.৮২ লক্ষ কোটি টাকা রাজস্ব আয় কম হবে বলে অনুমান। কেন্দ্র এর মধ্যে ১.১০ লক্ষ কোটি টাকা নিজেরা ধার করে রাজ্যকে ধার দিতে রাজি হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের সুরেই রাজস্থানও দাবি তুলেছে, বাকি ৭২ হাজার কোটি টাকাও কেন্দ্র ধার নিক। তার পরে রাজ্যকে ধার দিক।
বাকি টাকা ধার নিতে কেন্দ্রের কোথায় আপত্তি? অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যকে অতিরিক্ত ধার করার অনুমতি দিয়েছি। রাজ্য চাইলে ৭২ হাজার কোটির তুলনায় অনেক বেশি টাকা ধার করতে পারে।’’ কিন্তু নির্মলা সীতারামনকে চিঠি লিখে অমিত মিত্র জানিয়েছেন, রাজ্য ধার করতে গেলে অনেক বেশি সুদ গুণতে হবে। সুদে-আসলে রাজ্যের ঘাড়ে ঋণের বোঝা চাপবে। উল্টো দিকে কেন্দ্র রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সাহায্য নিয়ে ধার করলে অনেক কম সুদে ঋণ মিলবে। কেন্দ্রের রাজকোষ ঘাটতি বাড়ছে না। গোটা ঋণই সুদ-সহ ২০২২-এর পরেও জিএসটি সেস বসিয়ে শোধ হবে।
অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের কাছে এর কোনও পাল্টা জবাব নেই। কেরল ও ছত্তীসগঢ়ের মতো রাজ্যগুলিও কেন্দ্রের কাছে একই দাবি তুলবে বলে ইঙ্গিত মিলছে। ছত্তীসগঢ়ের রাজস্বমন্ত্রী টি এস সিংহ দেও-র বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গ-কেরল-ছত্তীসগঢ়-রাজস্থানের অর্থমন্ত্রীদের মধ্যে নিয়মিত মতের আদানপ্রদান চলছে। বিরোধী শিবিরের ইঙ্গিত, আগামী জিএসটি পরিষদের বৈঠকে বিরোধী শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা এক সুরে দাবি তুলবেন, কেন্দ্র গোটা জিএসটি ক্ষতিপূরণের টাকাই নিজে ধার করে রাজ্যকে ধার দিক। তাঁদের যুক্তি, ওই ৭২ হাজার কোটি টাকা চলতি বছরেই কেন্দ্রের থেকে রাজ্যের কোষাগারে মেলার কথা ছিল। তার জন্য কেন্দ্র এখন রাজ্যগুলিকে বাড়তি সুদ গুণতে বলতে পারে না।