প্রতীকী ছবি।
শিল্পায়নের নিরিখে পিছিয়ে থাকা পশ্চিমবঙ্গ, বিহারের মতো রাজ্য পরিকাঠামোয় দেড় থেকে চার গুণ খরচ বাড়িয়েছে। কিন্তু গুজরাত, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্য কোভিডের আগের বছরের থেকে চলতি অর্থ বছরে পরিকাঠামোয় কম অর্থ খরচ করেছে। চলতি অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসের হিসেব অন্তত সে রকমই।
রাজ্যগুলির পরিকাঠামোয় খরচে জোর দিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চাইছেন। সরকারি সূত্রের খবর, আগামী ১৫ নভেম্বর এই বৈঠক হতে পারে। অর্থ বছরের শেষ ছয় মাসে রাজ্যগুলি যাতে পরিকাঠামো খরচে গতি বাড়ায়, তার জন্যই এই বৈঠক। লক্ষ্য হল, কোভিড-লকডাউনের ধাক্কা কাটিয়ে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়ায় আরও প্রাণসঞ্চার। অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, দীপাবলির আগেই অর্থমন্ত্রী বিভিন্ন মন্ত্রক, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সঙ্গে পরিকাঠামোয় খরচ নিয়ে ধারাবাহিক বৈঠক করেছেন। যথা সময়ে অর্থ মঞ্জুর, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। মোদী সরকার এ বার রাজ্যগুলির সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলতে চাইছে। কারণ অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাস পার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু রাজ্যগুলি পরিকাঠামোয় যথেষ্ট পরিমাণে খরচ করছে না বলেই মনে হচ্ছে।
বাজেটে কেন্দ্রীয় সরকার চলতি অর্থ বছরে ৫.৫৪ লক্ষ কোটি টাকা পরিকাঠামোয় খরচের লক্ষ্য নিয়েছিল। গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে প্রথম ছয় মাসে কেন্দ্র ২.২৯ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করেছে। রাজ্যগুলি এ বছর পরিকাঠামোয় ৫.৯৭ লক্ষ কোটি টাকা ঢালবে বলে কেন্দ্র লক্ষ্য স্থির করেছিল।
কিন্তু রাজ্যগুলির ঋণ নেওয়ার হার দেখে কেন্দ্র মনে করছে, যথেষ্ট পরিমাণে পরিকাঠামোয় খরচ হচ্ছে না। গত বছর বা লকডাউনের বছরের তুলনাতেও রাজ্যগুলির ঋণ নেওয়ার হার কম। রাজ্যগুলির জন্য এ বার রাজ্যের জিডিপি-র ৪ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নেওয়ার ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র। যার অর্থ, রাজ্যগুলি মোট ৮.৪৭ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নিতে পারবে।
অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, চলতি অর্থ বছরের প্রথম তিন মাস, এপ্রিল-জুনের হিসেব বলছে, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ুর মতো শিল্পোন্নত রাজ্য কোভিডের আগের বছরের এই সময়ের তুলনায় পরিকাঠামোয় কম খরচ করেছে। তবে অধিকাংশ রাজ্যই খরচ বাড়িয়েছে।
বড় রাজ্যগুলির মধ্যে বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এগিয়ে। বিহার কোভিডের আগের বছরের তুলনায় এই অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে ৪০০ শতাংশ বেশি খরচ করেছে। পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ১৪০ শতাংশ বেশি খরচ হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, “অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাসের মধ্যেই কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ ধাক্কা দিয়েছিল। কিন্তু এ বার দেশ জুড়ে লকডাউন না হওয়ায় পরিকাঠামো তৈরির কাজে কম ধাক্কা লেগেছে। অধিকাংশ রাজ্যেই কোভিডের প্রকোপ কমে আসায় এ বার পরিকাঠামোয় খরচের গতি বাড়ানো যেতে পারে।”