প্রতীকী ছবি।
দীর্ঘ বিরতির পরে ফের কেন্দ্রের সঙ্গে নাগা জঙ্গি সংগঠন এনএসসিএন (আইএম)-এর শান্তি আলোচনা শুরু হল। কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যস্থতাকারী এ কে মিশ্র আইএম-এর সদর দফতর হেব্রনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তথা প্রতিষ্ঠাতা থুইংলেং মুইভা, চেয়ারম্যান কিউ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান টি ওয়াংনাও ও অন্য শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করলেন।
এই প্রথম বার দিল্লিতে না হয়ে, কেন্দ্রীয় মধ্যস্থতাকারী হেব্রনে শান্তি বৈঠকে মিলিত হলেন। অবশ্য আইএমের তরফে জানানো হয়েছে, এটি ছিল সৌজন্য বৈঠক। তাদের সঙ্গে পরের বৈঠক হবে শুক্র ও শনিবার। এ ছাড়া মিশ্র এনএসসিএন খাপলাং বাহিনীর সংঘর্ষ বিরতিতে থাকা সভাপতি নিকি সুমি ও অপর শীর্ষ নেতা স্টারসন লামকাংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন চুমুকেডিমা পুলিশ কমপ্লেক্সে। বৃহস্পতিবার তিনি শান্তি আলোচনা চালানো বাকি নাগা জঙ্গি সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ এনএনপিজি-র সঙ্গে বৈঠক করবেন।
উল্লেখ্য ২০১৪ সাল থেকে মধ্যস্থতাকারী থাকা আর এন রবির আমলে ২০১৫ সালে আইএম ও কেন্দ্রের মধ্যে খসড়া চুক্তি সই হয়েছিল। কিন্তু ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর শান্তি আলোচনা শেষ হয়ে গেলেও বৃহত্তর নাগালিমে পৃথক পতাকা ও পৃথক সংবিধানের দাবিতে অনড় থাকে আইএম। জট কাটাতে রবিকে পরে নাগাল্যান্ডের রাজ্যপাল করে পাঠানো হয়। কিন্তু আইএম-এর তোলাবাজি, অস্ত্র বহন করা, অবৈধ ভাবে কর আদায় করার মত বিভিন্ন বিষয়ে সরব ছিলেন রবি।
দুই তরফে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকে। শেষ পর্যন্ত রবিকে নাগাল্যান্ড থেকে সরানো হয়। নতুন মধ্যস্থতাকারী মিশ্র শান্তি বৈঠক শুরু করার মধ্যেই বুধবার কেন্দ্রীয় সরকার এনএসসিএন-এর এনকে, কে-খাংঘো ও রিফর্মেশন গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষবিরতির মেয়াদ আরও এক বছর বৃদ্ধি করল।
এ দিকে, নাগাল্যান্ডে সামনের বছর নির্বাচন। ভাবা হয়েছিল ২০২২ সালের মধ্যে সর্বসম্মত সমাধানসূত্র বের হবে, সারা হবে নাগা চুক্তি। সেই মতো নাগাল্যান্ডের সব দলের বিধায়ক এক হয়ে রাজ্যে বিরোধীহীন, সর্বদলীয় সরকার চালাচ্ছে। কিন্তু আলোচনায় জটিলতা সেই সমীকরণ বদলে দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী নেফিউ রিও বলেন, “যদি নাগা সমস্যার সর্বসম্মত সমাধানসূত্র বেরোয় তবে সব বিধায়ক নাগাল্যান্ডে স্থায়ী শান্তির স্বার্থে বিকল্প ব্যবস্থার জন্য রাস্তা করে দিতে তৈরি কিন্তু যদি সমাধানসূত্র বার না হয়, তবে ২০২৩ সালে সকলে নিজের দলের হয়ে নির্বাচনে লড়তে নামবেন।” তিনি আরও বলেন, “নাগা সংগঠনগুলির নেতারা সর্বসম্মত মৈত্রী প্রস্তাবে সই করার পরেও বিভাজিত হয়ে গিয়েছেন। ২৫ বছর ধরে আলোচনা চললেও কোনও সমাধানসূত্র বেরোচ্ছে না, তা দুর্ভাগ্যজনক। ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমাধানসূত্র বের করুন ও শান্তি চুক্তি সারুন। না হলে নতুন জটিলতা দেখা দেবে।”