প্রতীকী ছবি।
দেড়শো বছরেরও বেশি পুরনো ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ আইন পাল্টাতে উদ্যোগী হল নরেন্দ্র মোদী সরকার। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়েই এই পরিবর্তনের কথা ভাবা হচ্ছে বলে কেন্দ্রের দাবি। পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত ওই আইনগুলি বদলানোর জন্য প্রয়োজনীয় সুপারিশ ও পরামর্শ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, দেশের সমস্ত রাজ্যের হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি, সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও সাংসদদের চিঠি দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
মূলত প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা ভারতীয় দণ্ডবিধিতে কী ধরনের পরিবর্তন চান, তা জানতে চেয়ে ওই চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
ব্রিটিশদের তৈরি করে যাওয়া ভারতীয় দণ্ডবিধিতে (১৮৬০) সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কিছু পরিবর্তন হলেও, তার সার্বিক সংস্কারের দাবি উঠছে দীর্ঘদিন ধরে। অমিত শাহ তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, ‘সাত দশকের ভারতীয় গণতন্ত্রের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, বর্তমানে যে ফৌজদারি আইন রয়েছে, তার সার্বিক সমীক্ষা প্রয়োজন। বর্তমান সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার লক্ষ্যে ভারতীয় দণ্ডবিধি, সাক্ষ্যপ্রমাণ আইন (১৮৭২) ও ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে (১৯৭৩) পরিবর্তন জরুরি। কেন্দ্র এ বিষয়ে জনমুখী আইনি পরিকাঠামো গঠনের লক্ষ্যে পদক্ষেপ করতে চায়।’
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল থেকে শুরু করে হালে তিন কৃষি আইনের সংস্কার— সংসদে সংখ্যার জোরে এই সমস্ত প্রস্তাব পাশ করিয়েও তা রূপায়ণে ব্যর্থ হয়েছে মোদী সরকার। এক তরফা ভাবে ওই বিল আনার প্রতিবাদে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সরব হতে দেখা গিয়েছে বিরোধীদের। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টি রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। তাই ভারতীয় দণ্ডবিধি পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করতে গিয়ে বিরোধী রাজ্যগুলির কাছ থেকে ভবিষ্যতে যাতে বাধা পেতে না হয়, মূলত সেই কারণে কিছুটা ‘ব্যতিক্রমী পথে হেঁটে’ গোড়াতেই বিরোধী দলগুলির মতামত নেওয়ার এই সিদ্ধান্ত।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চিঠিতে লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্র হল, সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস, সবকা প্রয়াস। সেই নীতি মেনে যাতে দেশবাসীকে দ্রুত ন্যায়বিচার দেওয়া সম্ভব হয়, বিশেষত দুর্বল ও পিছিয়ে থাকা শ্রেণির মানুষের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করা সম্ভব হয়, সেই লক্ষ্যেই আইনগুলিতে সময়োপযোগী পরিবর্তন আনার কথা ভেবেছে সরকার।’