দীনেশ্বর শর্মা।
জম্মু-কাশ্মীরে প্রতি বছর ‘দরবার বদল’ হয় ৬ নভেম্বর। শ্রীনগর থেকে জম্মুতে চলে আসে রাজধানী। সেই বদলের দিনেই পাঁচ দিনের সফরে কাশ্মীরে পা দিলেন কেন্দ্রের বিশেষ দূত দীনেশ্বর শর্মা। বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যিনি কাশ্মীরের পরিস্থিতিতে কিছুটা বদল আনতে পারবেন বলে আশা নরেন্দ্র মোদী সরকারের। কিন্তু নিজেদের সরকারি সংবাদমাধ্যমে বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত নেতৃত্বকে কথায় না যেতে সরাসরি উস্কানি দিয়েছে পাকিস্তান। সেইসঙ্গে কাশ্মীর প্রসঙ্গে কড়া বিবৃতি দিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খকন আব্বাসি। ফলে পরিস্থিতি যে এখনও জটিলই তা মেনে নিচ্ছেন মোদী সরকারের কর্তারাই।
বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত নেতৃত্ব আগেই বলেন, দীনেশ্বরের সঙ্গে আলোচনায় তাঁরা আগ্রহী নন। কারণ, এই আলোচনার মাধ্যমে কেন্দ্র আসল সমস্যা থেকে নজর অন্য দিকে ঘোরাতে চাইছে। হুরিয়তের সেই বক্তব্যকে তুলে ধরে পাক সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভারত সরকারের বিশেষ দূতের কোনও রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতাই নেই। একই সঙ্গে কড়া বিবৃতি দিয়ে পাকিস্তান বুঝিয়ে দিয়েছে কাশ্মীর প্রশ্নে কোনও নমনীয় অবস্থান নিতে তারা আপাতত রাজি নয়। গত কাল লন্ডনে এক সম্মেলনে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খকন আব্বাসি বলেন, ‘‘স্বাধীন কাশ্মীরের ভাবনার গ্রহণযোগ্যতা নেই। আর কাশ্মীরই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে মূল বিষয়। কাশ্মীর সমস্যার সমাধান না হলে ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক অস্থিরই থাকবে।’’ তবে পাক প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ সমস্যা সমাধানের পথ নয়। আমরা সব সময়েই আলোচনার জন্য রাজি।’’ বস্তুত দীনেশ্বরের সঙ্গে আলোচনায় বিশেষ উৎসাহী নন জম্মু-কাশ্মীরের প্রধান বিরোধী দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা আবদুল্লারাও। আজ অবশ্য দলের মুখপাত্র তনভির সাদিক জানান, তাঁদের আলোচনার জন্য ডাকাও হয়নি।
আরও পড়ুন:কালো টাকার নথিতে চাপে প্রধানমন্ত্রী
তাঁর কথায়, ‘‘নিজে থেকে দীনেশ্বরের সঙ্গে কথা বলতে যাব না। আগে যে সব দূত ছিলেন তাঁদের কার্যকলাপ গোটা প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপির জোটসঙ্গী পিডিপি-র নেত্রী মেহবুবা মুফতি ছাড়া উপত্যকার কোনও রাজনৈতিক নেতাই কেন্দ্রের বিশেষ দূতকে স্বাগত জানাননি। আজ শ্রীনগরে দীনেশ্বরের সঙ্গে দেখা করেছেন কেবল কয়েকটি স্থানীয় মঞ্চের নেতা, শিকারা মালিকদের প্রতিনিধি ও সিনেমা হল মালিকেরা। আরও দু’দিন কাশ্মীরে থাকার পরে জম্মুতে যাওয়ার কথা প্রাক্তন গোয়েন্দাপ্রধান দীনেশ্বরের।
এ দিনই বাহিনী ও জঙ্গিদের বড় সংঘর্ষ হয়েছে পুলওয়ামায়। আগলার-কান্ডি এলাকায় জঙ্গি গতিবিধির খবর পেয়ে অভিযানে নামে বাহিনী। তল্লাশি চলাকালীন জওয়ানদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় জঙ্গিরা। সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের জওয়ান শ্যাম সুন্দর। খতম হয়েছে তিন জঙ্গিও। অভিযানের খবর পেয়েই বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করে স্থানীয়দের একাংশ। বাহিনীর গুলিতে তারিক বাট নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা আহত হয়েছে।