—প্রতীকী ছবি।
মণিপুরের বিতর্কিত একটি ভিডিয়ো নিয়ে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে জাতীয় রাজনীতিতে। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া সংসদের বাদল অধিবেশনও এই নিয়ে উত্তপ্ত হতে পারে। তার আগে ‘স্পর্শকাতর’ এই বিষয়টি নিয়ে নড়চড়ে বসল কেন্দ্রীয় সরকারও। ইতিমধ্যেই টুইটার-সহ সমস্ত সমাজমাধ্যমকে একটি নির্দেশিকা দিয়ে কেন্দ্র জানিয়েছে ওই ভিডিয়ো দ্রুত সরিয়ে নিতে হবে। এই নিয়ে টুইটার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পদক্ষেপও করতে পারে কেন্দ্র। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর তরফে এমনই খবর মিলেছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ভিডিয়োটি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে, এটা বুঝেই টুইটারের পদক্ষেপ করা উচিত ছিল। কিন্তু ওই সমাজমাধ্যমটি যে ভাবে ভিডিয়োটি ছড়িয়ে পড়তে ‘সাহায্য’ করেছে, তাতে প্রশাসনের সঙ্গে ‘অসহযোগিতা’ করা হয়েছে বলে মনে করছে কেন্দ্র। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত আইনও টুইটার ভেঙেছে বলে মনে করছে সরকার। ওই সূত্র মারফতই জানা গিয়েছে, কেন্দ্রের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক টুইটার এবং অন্য সমাজমাধ্যমগুলির সঙ্গে সমন্বয় রেখে ভিডিয়োটি ছড়িয়ে পড়া রুখতে চাইছে।
মণিপুর প্রশাসনের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ভিডিয়োটিতে যে ভয়াবহ ঘটনার ছবি দেখা যাচ্ছে, তা গত ৪ মে ঘটে। ঘটনাচক্রে ৩ মে থেকেই জাতিগত হিংসায় উত্তপ্ত হয়েছিল মণিপুর। থৌবল জেলায় নংপোক সেকমাই থানার অদূরে দুই মহিলাকে প্রকাশ্যে যৌন নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। যদিও একটি সংগঠনের দাবি, ঘটনাটি কঙ্গকপি জেলার। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ এই ঘটনায় পুলিশি তদন্তের নির্দেশ দেন। অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি টুইটারে লেখেন, “দুই মহিলার উপর ভয়াবহ যৌন নির্যাতনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহের সঙ্গে কথা হয়েছে। তদন্ত চলছে। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি ঘটনার ন্যায়বিচার হবে।”
প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওই বিজেপি শাসিত রাজ্যে। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই কুকি, জ়ো-সহ বিভিন্ন জনজাতি গোষ্ঠীর সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই হিংসার সূচনা হয় সেখানে। এখনও পর্যন্ত প্রায় দু’শো মানুষের মৃত্যু এবং ৫০ হাজারের বেশি গৃহহীন হয়েছেন মণিপুরে। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী দলগুলি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি দাবি করেছে।