গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
কোভিড সামলাতে ‘আত্মনির্ভর ভারত অভিযান’ প্রকল্পে ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আরও একটি আর্থিক সাহায্যের প্রকল্প নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছে কেন্দ্র। রবিবার একটি সাক্ষাৎকারে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থসচিব অজয়ভূষণ পাণ্ডে। তবে সেই প্যাকেজ কত টাকার বা কখন ঘোষণা হতে পারে, সে বিষয়ে কিছু স্পষ্ট করেননি অর্থসচিব। জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট সব মহলের সঙ্গে আলোচনা চলছে। সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা হলেও তাতে সরাসরি নগদ কোনও অনুদান দেওয়া হয়নি কোনও ক্ষেত্রকেই। তা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন। দ্বিতীয় দফার এই আর্থিক প্যাকেজে তেমন কোনও সংস্থান থাকবে কি না, তা নিয়ে মুখ খোলেননি অর্থসচিব। রবিবার একটি সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। অর্থনীতির কোনও ক্ষেত্র বা সমাজের কোন স্তরের মানুষের কী ধরনের চাহিদা রয়েছে, তাঁরা কী ধরনের সাহায্য চাইছেন, সেই সব বুঝে সেই অনুযায়ী বন্দোবস্ত হতে পারে।’’
কিসের ভিত্তিতে হবে সেই বন্দোবস্ত? অজয়ের বক্তব্য, ‘‘বিভিন্ন শিল্প সংগঠন, বণিক মহল, কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রক থেকে পরামর্শ নেওয়ার কাজ চলছে। অর্থনীতির কী চাহিদা, সেটা বোঝার চেষ্টা চলছে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’’ করোনার প্রভাব কাটিয়ে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি। বলছেন অর্থনীতিবিদরা। অর্থসচিবও বলেছেন, ধীরে ধীরে পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে অর্থনীতি। স্থিতিশীল বৃদ্ধির দিকে এগোচ্ছে দেশ। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের একাংশের প্রশ্ন, স্বাভাবিক নিয়মেই যদি অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ায়, তা হলে আর নতুন করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কী প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত কমে ৪৫ হাজার, দেশে মোট সুস্থ বেড়ে ৭৫ লাখ
কেন্দ্রের সুরে অর্থসচিবও বলেছেন, ‘‘করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকেই সব ক্ষেত্রকে আমরা ধারাবাহিক ও নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছি। লকডাউনের সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফিরতে সাহায্য করা হয়েছে, জন ধন অ্যাকাউন্টে নগদ সাহায্য দেওয়া হয়েছে, পিএম কিষাণ যোজনাতেও সাহায্য করা হয়েছে। এ ছাড়া ইপিএফ-এ কর্মী ও সংস্থাগুলিকে স্বস্তি দিতে প্রকল্প ঘোষণা হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষুদ্র, মাঝারি ও অতিক্ষুদ্র শিল্পের জন্য দেওয়া হয়েছে ঋণের কিস্তি মকুবের সুবিধা।’’ কিন্তু বিরোধীরা সেই সময়ও অভিযোগ তুলেছিলেন, এগুলি সবই চালু প্রকল্প। কোভিডের জন্য আলাদা করে কোনও নগদ অনুদানের বন্দোবস্ত হয়নি।
আরও পড়ুন: অভিনন্দন বর্তমান নিয়ে মন্তব্য, মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গের মামলা করছে পাকিস্তান
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যেও অক্টোবরে দেশে জিএসটি আদায় গত বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে জিডিপি বৃদ্ধি হয়েছে ৪ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান থেকে বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন, কোভিডের আগের অবস্থায় ফেরার মুখে অর্থনীতি। অজয়ের কথায়, ‘‘সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট, আমরা প্রাক-কোভিড স্তরে পৌঁছে গিয়েছি। আগামী পাঁচ মাস এই বৃদ্ধি ধরে রাখতে পারলে ঋণাত্মক বৃদ্ধি কাটিয়ে মার্চে পৌঁছে যেতে পারব শূন্যের কাছাকাছি।’’