সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র ফাইল চিত্র
ত্বকে ছোঁয়া না লাগলে যৌন নির্যাতন নয়— বম্বে হাই কোর্টের এই বিতর্কিত রায়কে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করল কেন্দ্রীয় সরকার।
গত ১৯ জানুয়ারি ১২ বছর বয়সি একটি বালিকাকে যৌন নির্যাতনের মামলায় বম্বে হাই কোর্টের নাগপুর বেঞ্চ বলেছিল, অভিযুক্তের সঙ্গে নির্যাতিতার ত্বকের ছোঁয়া লাগেনি। ফলে পকসো (যৌন নির্যাতন থেকে শিশুদের রক্ষা) আইনে একে যৌন নির্যাতন বলা যায় না। বিচারপতি পুষ্প গানেদিয়ালা মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই বালিকার পোশাক খুলে ফেলেনি। ফলে একে যৌন নির্যাতন বলা যায় না।’’ পকসো আইনে যৌন নির্যাতনের সাজা কমপক্ষে তিন বছরের জেল। কিন্তু পকসো মামলা থেকে অভিযুক্তকে রেহাই দেওয়া হয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে এসেছিল মহারাষ্ট্র সরকার, জাতীয় মহিলা কমিশন। এই মামলায় অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল আজ মন্তব্য করেন, ‘‘হাই কোর্টের এমন নির্দেশে সমাজে মারাত্মক প্রভাব পড়বে। এই রায়ের অর্থ, দস্তানা পরে কোনও শিশুকে যৌন নির্যাতন করলে অভিযুক্তের রেহাই মিলতে পারে।’’ অ্যাটর্নি জেনারেলের মতে, বম্বে হাইকোর্টের রায় নজির সৃষ্টি করবে। এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী। কারণ, ওই বালিকাকে যৌন নির্যাতন করার চেষ্টা করেছিল অভিযুক্ত। কিন্তু সে জামিন পেয়ে গিয়েছে। বেণুগোপাল শীর্ষ আদালতে জানান, গত এক বছরে পকসো আইনে দেশে প্রায় ৪৩ হাজার মামলা হয়েছে।
বম্বে হাইকোর্ট এই রায় দেওয়ার পরেই অবশ্য অ্যাটর্নি জেনারেল শীর্ষ আদালতে জানিয়েছিলেন, একে চ্যালেঞ্জ করতে চায় কেন্দ্র। এর পর জানুয়ারির ২৭ তারিখেই হাই কোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট।
মামলার আগের শুনানির সময়ে শীর্ষ আদালত অভিযুক্তের আইনজীবীর উপস্থিতির উপর জোর দিয়েছিল। আজও অভিযুক্তের তরফে কোনও আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। এই মামলায় তাঁর উপস্থিতি জরুরি মনে করে সুপ্রিম কোর্টের আইনি পরিষেবা কমিটিকে আইনজীবী নিয়োগ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। পরবর্তী শুনানি ১৪ সেপ্টেম্বর।