একসঙ্গে ভোট করাতে রাজ্যকে বোঝাবে নীতি আয়োগ

আর ভাবনাচিন্তা, তর্কবিতর্ক নয়। লোকসভা ভোটের সঙ্গেই সব রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন করাতে কোমর বেঁধে নেমে পড়ল নরেন্দ্র মোদী সরকার।প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নীতি আয়োগ এ বার রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৭ ০৩:৫৫
Share:

আর ভাবনাচিন্তা, তর্কবিতর্ক নয়। লোকসভা ভোটের সঙ্গেই সব রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন করাতে কোমর বেঁধে নেমে পড়ল নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নীতি আয়োগ এ বার রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে। নীতি আয়োগের তিন বছরের ‘অ্যাকশন অ্যাজেন্ডা’-তেই সুপারিশ করা হয়েছে, ২০১৯-এর পরে ফের ২০২৪ সালে লোকসভা ভোট হওয়ার কথা। ২০২৪ থেকেই একসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা ভোট হোক। এর ফলে কিছু রাজ্যের বিধানসভার মেয়াদ কাটছাঁট করতে হবে। কিছু বিধানসভার মেয়াদ বাড়িয়ে দিতে হবে। আয়োগের যুক্তি, এক বারই সেই সমস্যা হবে। কিন্তু এতে লাভ হল, ভোটের প্রচারের সময়ে ‘আদর্শ আচরণবিধি’ চালু থাকে বলে নতুন সরকারি কর্মসূচি কার্যত বন্ধ থাকে। কোনও না কোনও ভোটের জন্য বারবার সরকারের কাজ ব্যাহত হয়। তা আর হবে না।

মোদী নিজে একাধিক মঞ্চে একসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের পক্ষে সওয়াল করে বলেছেন, সব দলেরই এতে অল্পবিস্তর সমস্যা হবে। কিন্তু একে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে না দেখে গঠনমূলক বিতর্ক প্রয়োজন। সরকারি পোর্টাল ‘মাই গভ’-এ আম নাগরিকের মতামতও চাওয়া হয়েছে। প্রজাতন্ত্র দিবসে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতাতেও প্রণব মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, স্বাধীনতার পরে লোকসভা ও বিধানসভার ভোট একসঙ্গেই হতো। সেই প্রথা ফিরিয়ে আনা দরকার কি না, তা নিয়ে আলাপ-আলোচনার সময় এসেছে।

Advertisement

আরও পড়ুন:এ বার মোদীর লক্ষ্য ‘ইপিআই সংস্কৃতি’

১৯৫১-’৫২, ১৯৫৭, ১৯৬২ ও ১৯৬৭-তে লোকসভা ও বিধানসভাগুলির ভোট একসঙ্গেই হয়েছিল। কিন্তু তার পর কয়েকটি রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হওয়ায় সেই প্রথা ভেঙে যায়। ১৯৭০-এ লোকসভাই আগাম ভেঙে দিতে হয়। পরের বছর অকাল ভোট হয়। তার পর পৃথক পৃথক ভোটই হয়ে আসছে।

বাজপেয়ী সরকারের আমলে তদানীন্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আডবাণী একসঙ্গে ভোট করানোর কথা বলতেন। নীতি আয়োগের ‘অ্যাকশন অ্যাজেন্ডা’-য় বিষয়টি তুলে এনে মোদী বুঝিয়ে দিলেন, তিনি এ বার তাঁর ভাবনা কার্যকর করতে চান। নির্বাচন কমিশন আইন মন্ত্রককে জানিয়েছে, একসঙ্গে ভোট হলে তাদের কোনও অসুবিধে নেই। আয়োগের সুপারিশ, একসঙ্গে লোকসভা ও সব রাজ্যের ভোট করাতে হলে যে সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন, তার খসড়া তৈরিতে বিশেষজ্ঞ, আমলা ও সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের একটি গোষ্ঠী তৈরি হোক।

অধিকাংশ দলের আশঙ্কা, এর ফলে কেন্দ্র ও সিংহভাগ রাজ্যে একই দল ক্ষমতায় এসে যেতে পারে। তাতে ভিন্ন রাজনৈতিক স্বর বলে কিছু থাকবে না। কংগ্রেসের প্রশ্ন, কেন নির্বাচিত বিধানসভার মেয়াদ কাটছাঁট করা হবে! সিপিএমের যুক্তি, কোনও জোট সরকারের পতন হলে ফের ভোট দরকার। এখন বিধানসভা-লোকসভার ভোট একসঙ্গে হবে বলে সেই সরকারকে ক্ষমতায় রেখে দিলে গণতান্ত্রিক অধিকার, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো লঙ্ঘন করা হবে। তৃণমূলও এর ঘোর বিরোধী। আবার বিজেডি, এডিএমকে-র মতো দল এর পক্ষে। তাদের যুক্তি, এতে অর্থ, সময়, শক্তি সাশ্রয় হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement