অসমের তৈলক্ষেত্রে ৮০ হাজার কোটি বিনিয়োগ কেন্দ্রের

দক্ষিণ-পূ্র্ব এশিয়ার পেট্রোল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের কেন্দ্র হিসেবে অসমকে গড়ে তুলতে চায় কেন্দ্র। তাই শুধু অসমে পেট্রোলিয়াম ক্ষেত্রে আগামী দেড় দশকে ৮০ হাজার কোটি টাকা খরচের রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে। আজ এ কথা জানান স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম প্রতিমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৬ ০৯:২৫
Share:

কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। গুয়াহাটিতে সাংবাদিক বৈঠকে। ছবি: পিটিআই।

দক্ষিণ-পূ্র্ব এশিয়ার পেট্রোল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের কেন্দ্র হিসেবে অসমকে গড়ে তুলতে চায় কেন্দ্র। তাই শুধু অসমে পেট্রোলিয়াম ক্ষেত্রে আগামী দেড় দশকে ৮০ হাজার কোটি টাকা খরচের রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে। আজ এ কথা জানান স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম প্রতিমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ও রাজ্যের শিল্প-বানিজ্যমন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারিকে পাশে নিয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জানান— ভুটান, বাংলাদেশ ও মায়ানমারকে পাশে টেনে অসমকে এই অঞ্চলের পেট্রো-হাব হিসেবে তৈরি করা হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে পেট্রোলিয়াম ক্ষেত্রে মন্ত্রক ১ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। তার মধ্যে শুধু অসমের ভাগেই পড়বে ৮০ হাজার কোটি। এই অর্থবর্ষের মধ্যে রাজ্যে ৬ হাজার কোটি বিনিয়োগের পরিকল্পনা তৈরি করে ফেলা হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, অসম ও উত্তর-পূর্বে যে পরিমাণ হাইড্রোকার্বন মজুত রয়েছে তার বিজ্ঞানসম্মত উত্তোলন, শোধন ও ব্যবহারের জন্য বিনিয়োগে কার্পণ্য করবে না কেন্দ্র। রাজ্যের চারটি শোধনাগার— ডিগবয়, নুমালিগড়, বঙাইগাঁও ও গুয়াহাটির আধুনিকীকরণ, ক্ষমতা বৃদ্ধি, এই অঞ্চলে ৫ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ

Advertisement

অপরিশোধিত তেল, শোধিত তেল,

এলপিজি ও প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহকারী পাইপলাইন বসানোর জন্য বিনিয়োগ করা হবে। চারটি শোধনাগারের বার্ষিক মজুত ক্ষমতা এখন ৭ মিলিয়ন মেট্রিক টন। তা বাড়িয়ে আগামী দশ বছরের মধ্যে ১৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন করার পরিকল্পনা নিয়েছে মন্ত্রক। শোধনাগারের জন্য অপরিশোধিত তেল আমদানি করা হবে নাইজেরিয়া ও পশ্চিম আফ্রিকা থেকে। তা আসবে পারাদ্বীপ-হলদিয়া-বারাউনি-গুয়াহাটি পাইপলাইন বেয়ে।

রাজ্যের নামরূপ ও লাকোয়া বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রে আরও বেশি প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করার জন্য আর্জি জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। মন্ত্রী জানান, অসম সরকারের অনুরোধে রাজি মন্ত্রক। শুধু দু’টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নয়, ডিব্রুগড়ের গ্যাস ক্র্যাকার প্রকল্প ও নামরূপের সার ও পেট্রোকেমিক্যাল প্ল্যান্ট আরও কয়েকটি বৃহৎ শিল্পক্ষেত্রেও গ্যাস সরবরাহ করার জন্য

মন্ত্রী অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেড ও ওএনজিসিকে নির্দেশ দেন। রাজ্যের বকেয়া ১০ হাজার কোটি টাকা তেল রয়্যালটি মেটানোর জন্যেও ধর্মেন্দ্রকে অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্ত্রী জানান, ২০১৪ সাল থেকে অসম সরকারের বকেয়া তেল রয়্যালটির পরিমাণ ১ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। তা দাবি করে রাজ্যকে আদালতের দ্বারস্থ হতে বলেন তিনি। মন্ত্রী জানান, আদালতে মামলা উঠলে তিনি অয়েল-ওএনজিসিকে চ্যালেঞ্জ করতে না করবেন। ইউপিএ আমলের বকেয়া টাকা সুপ্রিম কোর্টর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পরে দেওয়া যাবে।

পাশাপাশি, আগামী কাল রাজ্যের সাতটি ছোট তৈলক্ষেত্র লিজ দেওয়ার জন্য নিলামে তোলা হবে। তাতে যোগ দিতে দেশের শীর্ষস্থানে থাকা তেল ও গ্যাস কোম্পানিগুলির তাবড় কর্তা গুয়াহাটি আসছেন। বিডিং পরিচালনা করবেন পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তেল সংস্থা ও বিনিয়োগকারীদের সামনে রাজ্য তথা উত্তর-পূর্বের বিনিয়োগ সম্ভাবনা ও রাজ্যের তৈল ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করলে মেলা সুযোগ-সুবিধার কথা তুলে ধরা হবে। মন্ত্রী জানান, উত্তর-পূর্বে তেল ও গ্যাস ভাণ্ডারের ৪৪ শতাংশে এখন পর্যন্ত কাজ শুরু হয়েছে। বাকি ৫৬ শতাংশ নিয়ে কাজের সম্পূর্ণ সুযোগ রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement