সেমি-হাইস্পিড ট্রেন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। ফাইল চিত্র।
হাইস্পিড ট্রেনের চমক সামনে রেখে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের লড়াইয়ে নামা যে সম্ভব হবে না, সেটা ইতিমধ্যেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। তাই এ বার সেমি-হাইস্পিড ট্রেন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস দ্রুত চালু করার দিকে ঝুঁকছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার।
তৃতীয় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সেই সেমি-হাইস্পিড ট্রেনের মহড়া-দৌড় সফল হওয়ায় চলতি মাসেই ওই ট্রেনকে আমদাবাদ-মুম্বই রুটে ছুটতে দেখা যেতে পারে। ৩০ সেপ্টেম্বর দুর্গাপুজোর ঠিক আগে প্রধানমন্ত্রী মোদী ওই ট্রেনের সূচনা করতে পারেন বলে রেল সূত্রের খবর।
এর আগে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই রুটে জাপানি প্রযুক্তিতে হাইস্পিড ট্রেন চালু করার উদ্যোগ শুরু হলেও মহারাষ্ট্রের পালঘরে প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। দীর্ঘ আন্দোলনের জেরে জমি না-মেলায় প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। রেল জানিয়েছে, যে-গতিতে কাজ এগোচ্ছে, তাতে ২০২৬ সালে গুজরাতের অংশে এবং ২০২৮ সালে সারা দেশে ওই ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে। ফলে আপাতত উন্নততর প্রযুক্তির বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সেমি-হাইস্পিড ট্রেনকেই প্রচারে এগিয়ে দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস আগের দু’টির তুলনায় প্রযুক্তিগত ভাবে অনেকটাই উন্নত এবং হালকা বলে জানিয়েছে রেল। ওজন আগের ৪৩০ টন থেকে কমিয়ে ২৯০ টনে নামানো হয়েছে। নতুন ট্রেনটিমাত্র ৫২ সেকেন্ডের মধ্যে শূন্য থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিবেগ অর্জন করতে পারে। আগের ট্রেন দু’টির ক্ষেত্রে ওই সময় লাগছিল ৫৪.৬ সেকেন্ড। শূন্য থেকে ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার গতি অর্জন করতে আগের দু’টি ট্রেনে যেখানে ১৪৬ সেকেন্ড সময় লাগছিল, নতুন ট্রেনে লাগছে ১৩০ সেকেন্ড।
দুর্ঘটনা ঠেকাতে কবচ প্রযুক্তি ছাড়াও বন্দে ভারতে এগ্জ়িকিউটিভ শ্রেণিতে উন্নত প্রযুক্তির আসনে এবং কামরায় এলইডি টিভি, ২৪ ঘণ্টা ওয়াইফাই ছাড়াও উন্নত এবং দূষণ রোধক বাতানুকূল ব্যবস্থা থাকছে।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, অক্টোবরেই ওই ট্রেনের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে। মূলত, চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরিতে মাসে ২-৩টি ট্রেন উৎপাদন করা হবে। কয়েক মাস পরে রায়বেরেলীর মডার্ন কোচ ফ্যাক্টরি এবং কপূরথালার রেল কোচ ফ্যাক্টরি মিলিয়ে মাসে ৮-৯টি ট্রেন উৎপাদনের চেষ্টা চালানো হবে, যাতে আগামী বছর অগস্টের মধ্যে ৭৫টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করা যায়। যদিও বন্দে ভারত এক্সপ্রেস নির্মাতা দলের প্রধানতথা প্রাক্তন আইসিএফ-কর্তা এক বছরের মধ্যে ৭৫টি ট্রেন তৈরির লক্ষ্যমাত্রাটা অতি উচ্চাশা বলে মনে করছেন।