Arvind Kejriwal

কেজরীর মুখ্যমন্ত্রিত্ব যাবে কি, মেপে পা ফেলছে কেন্দ্র

গোড়া থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছে বিজেপি। নৈতিকতার দায় নিয়ে কেজরীওয়ালের ইস্তফার দাবি তুলেছেন ইন্ডিয়া জোটের কিছু নেতাও। কিন্তু জেলে বসে মুখ্যমন্ত্রিত্ব চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেননি কেজরীওয়াল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৪ ০৯:৩২
Share:

অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।

জেলে বসে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের মুখ্যমন্ত্রিত্ব আদৌ তিনি যে পছন্দ করছেন না, তা আজ স্পষ্ট করে দিলেন দিল্লির উপরাজ্যপাল ভি কে সাক্সেনা। তবে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কেজরীওয়াল কত দিন নিজের পদ ধরে রাখতে পারবেন, তা স্পষ্ট করেননি তিনি।

Advertisement

গোড়া থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছে বিজেপি। নৈতিকতার দায় নিয়ে কেজরীওয়ালের ইস্তফার দাবি তুলেছেন ইন্ডিয়া জোটের কিছু নেতাও। কিন্তু জেলে বসে মুখ্যমন্ত্রিত্ব চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেননি কেজরীওয়াল। রাজনীতিকদের একাংশের মতে, বিষয়টিকে তিনি সংঘাতের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে। কেননা একমাত্র উপরাজ্যপালেরই ক্ষমতা রয়েছে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার। সে ক্ষেত্রে আপের পক্ষে সহানুভূতির ঝড় কেবল দিল্লি নয়, পঞ্জাবেও উঠবে। যা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সেই কারণে দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির প্রশ্নে মেপে পা ফেলার পক্ষপাতী কেন্দ্র।

ইডি হেফাজতে থাকা অবস্থায় গত কয়েক দিনে দিল্লির পানীয় জল ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত দু’টি নির্দেশ জারি করেন কেজরীওয়াল। হেফাজতে থাকা অবস্থায় কী ভাবে একজন মুখ্যমন্ত্রী ওই নির্দেশ দিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছে বিজেপি। তাদের যুক্তি, দুর্নীতির অভিযোগে হেফাজতে থাকা কোনও মুখ্যমন্ত্রী জেলে বসে সরকার চালাতে পারেন না। তাই মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফার দাবিতে আজ দিল্লি বিধানসভার সামনে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি সমর্থকেরা। গোটা বিষয়টি জানিয়ে উপরাজ্যপালের কাছে অভিযোগও দায়ের করেছে বিজেপি। পাল্টা আজ বিজেপির স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে বিধানসভা চত্বরে বিক্ষোভ দেখান আপ বিধায়কেরা।

Advertisement

জেলে বসে কেজরীওয়ালের সরকার চালানোটা যে তাঁর পছন্দ নয়, সেটা অবশ্য স্পষ্টই করে দিয়েছেন উপরাজ্যপাল ভি কে সাক্সেনা। একটি সংবাদমাধ্যমের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি জানান, ‘‘আমি দিল্লিবাসীকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই সরকার কোনও ভাবেই জেল থেকে চলতে পারে না।’’ সাক্সেনার ওই বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে আপ নেতৃত্ব। দলের ধারণা, কেজরীওয়ালকে জেলে পোরার পরে এ বার তাঁর মুখ্যমন্ত্রী পদ ছিনিয়ে নিতে তৎপর হবে বিজেপি। আজ ইডি গোয়া থেকে আপের তিন নেতা, অমিত পালেকর, রামরাও ওয়াগ এবং দত্তপ্রসাদ নায়েককে সমন পাঠিয়েছে। সমন গিয়েছে ভান্ডারি সমাজের প্রেসিডেন্ট অশোক নাইকের কাছেও। এঁদের সকলকেই তদন্তে যোগ দিতে বলা হয়েছে।

আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত সপ্তাহে গ্রেফতার হন কেজরী। আগামিকাল তাঁর প্রথম দফা ইডি হেফাজত শেষ হওয়ার কথা। যদিও তলে তলে তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে সিবিআইও। তবে আগামিকাল কেজরীওয়ালকে আদালতে হাজির করালে আবগারি দুর্নীতি প্রসঙ্গে সকলের মুখোশ কেজরী খুলে দেবেন বলে আজ দাবি করেছেন তাঁর স্ত্রী সুনীতা কেজরীওয়াল। তিনি আজ বলেন, ‘‘তথাকথিত আবগারি দুর্নীতিতে ইডি আড়াইশোটির বেশি তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে। টাকার খোঁজে তল্লাশি চালালেও কোথাও একটি টাকাও পাওয়া যায়নি। এ বার কেজরীওয়াল নিজেই আদালতে জানাবেন ওই টাকা কোথা থেকে এসে কোথায় গিয়েছে।’’ সুনীতা ওই দাবি জানাতেই বিজেপির পাল্টা প্রশ্ন, কেজরীওয়ালের কাছে সব প্রমাণ যদি থাকেই, তা হলে মণীশ সিসৌদিয়া, সঞ্জয় সিংহের মতো নেতারা প্রায় বছরখানেক ধরে বন্দি থাকা সত্ত্বেও কেন মুখ খুললেন না কেজরী?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement