BJP

বঙ্গে বসে যাওয়া পুরনো নেতাদের মাঠে নামাতে তৎপর বিজেপি

রাজ্যে বিজেপির সংগঠনের হাল-হকিকত বুঝে নিতে চলতি মাসে মোট ১৯টি বৈঠক করার লক্ষ্য নিয়েছেন সুনীল বনসল-মঙ্গল পাণ্ডেরা। এর মধ্যে গত সপ্তাহে উত্তরবঙ্গে বৈঠক করে এসেছেন সুনীল।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২২ ০৭:৪৬
Share:

রাজ্য নেতৃত্বের কাছে বসে যাওয়া কর্মীদের তালিকা চেয়ে রেখেছেন বিজেপির দিল্লির নেতারা। ফাইল চিত্র।

বসে গিয়েছেন দলের পুরনো কর্মীরা। তাঁরা মাঠে না নামলে গত বারের লোকসভার মতো ভাল ফল যে অধরাই থেকে যাবে, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাই বিজেপির রাজ্য নেতারা যদি ঘরে বসে যাওয়াদের পথে নামাতে ব্যর্থ হয়, সে ক্ষেত্রে পুরনো কর্মীদের মানভঞ্জনে নিজেরাই দায়িত্ব তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সুনীল বনসল, মঙ্গল পাণ্ডের মতো বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। রাজ্য নেতৃত্বের কাছে বসে যাওয়া কর্মীদের তালিকাও চেয়ে রেখেছেন বিজেপির দিল্লির নেতারা।

Advertisement

রাজ্যে বিজেপির সংগঠনের হাল-হকিকত বুঝে নিতে চলতি মাসে মোট ১৯টি বৈঠক করার লক্ষ্য নিয়েছেন সুনীল বনসল-মঙ্গল পাণ্ডেরা। এর মধ্যে গত সপ্তাহে উত্তরবঙ্গে বৈঠক করে এসেছেন সুনীল। আগামী ১৮ নভেম্বর রাঢ় বঙ্গের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে আর এক কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডের। ওই বৈঠকে বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, আসানসোল, পুরুলিয়ার মতো এলাকাগুলিতে একেবারে মণ্ডল স্তর পর্যন্ত দলের কী পরিস্থিতি, তা খতিয়ে দেখতে বসবেন পাণ্ডে। বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে খাতায়-কলমে অধিকাংশ কমিটি তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে যখন এলাকায় যাওয়া হচ্ছে, তখন কোনও কিছুর অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে না! তাই আরও বেশি করে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে ঘুরে সংগঠনের প্রকৃত চিত্রটি কী, তা বোঝার চেষ্টা করছেন ওই পর্যবেক্ষকেরা।’’ ওই নেতার মতে, দলের পুরনো কর্মীদের বসে যাওয়া দলকে ভাবাচ্ছে। মূলত ২০১৯ সালে যে কর্মীরা দলকে পশ্চিমবঙ্গে বিপুল সাফল্য এনে দিয়েছিলেন, তাঁদের একটি বড় অংশই নানা কারণে বসে গিয়েছেন। সেই সব বসে যাওয়া কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের ফের দলের কাজে নামানোর জন্য রাজ্য নেতৃত্বকে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। প্রয়োজনে কোন এলাকায়, কোন কোন কর্মী বসে গিয়েছেন, তাঁদের তালিকাও চাওয়া হয়েছে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। রাজ্য নেতৃত্ব যদি ওই কাজে ব্যর্থ হয়, সে ক্ষেত্রে বনসল-পাণ্ডেরা নিজেরাই পুরনো কর্মীদের মাঠে ফেরাতে তৎপর হবেন।

একই সঙ্গে বিজেপির বঙ্গ নেতৃত্বের মধ্যে চলতে থাকা বিবাদও দলকে ক্রমশ দুর্বল করে চলেছে বলেই মত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। দলের একটি অংশ রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে সরানোর জন্য সক্রিয় থাকলেও সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে বনসল স্পষ্ট করে দেন যে, সুকান্তকে কোনও ভাবেই সরানো হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মতে, বনসল বিষয়টি স্পষ্ট করে দেওয়ার পরেও রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ সুকান্তকে সরানোর জন্য লাগাতার তদ্বির করে চলেছেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মতে, পঞ্চায়েত ভোটের আগে সুকান্তকে সরানোর সম্ভাবনা কম। তাতে দলের মধ্যে ফের নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হবে। দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর ভূমিকা নিয়েও ক্রমাগত প্রশ্ন ওঠায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। অমিতাভের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ওঠায় গত সেপ্টেম্বরে তাঁর ক্ষমতা অনেকাংশেই খর্ব করা হয়। যার ফলে রাঢ় বঙ্গ, হাওড়া, হুগলি ও মেদিনীপুরের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সতীশ ধন্দের হাতে। কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব জানতে পেরেছেন, সম্প্রতি উত্তরবঙ্গে বনসলের বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন অমিতাভ। দলের সংগঠনের দায়িত্বে থাকা নেতার ওই অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দলের একাধিক সাংসদ। যদিও এ নিয়ে বিতর্ক অনভিপ্রেত বলে মনে করছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement