ছবি: রয়টার্স।
রাত পোহালেই শুরু হতে চলেছে পৃথিবীর বৃহত্তম টিকাকরণ অভিযান। আগামিকাল সকাল সাড়ে দশটায় ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে সারা দেশে করোনার গণ-টিকাকরণের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টিকাকরণ চলবে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। যাঁদের নাম তালিকায় রয়েছে, তাঁদের সবাইকে আগামিকাল প্রতিষেধক নিতে আজ ফের অনুরোধ করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তবে মন্ত্রক এ-ও জানিয়েছে, প্রতিষেধক নেওয়াটা বাধ্যতামূলক নয়। কেউ টিকাকরণ কেন্দ্রে পৌঁছেও মত পাল্টালে তাঁর প্রতিষেধক না-নিয়ে ফিরে আসার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে।
প্রথম ধাপে টিকাকরণের আওতায় রয়েছেন এক কোটি স্বাস্থ্যকর্মী। তাঁদের মধ্যে অন্তত তিন লক্ষকে আগামিকাল সারা দেশের ৩০০৬টি কেন্দ্র থেকে প্রতিষেধক দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। অন্য রাষ্ট্রনেতারা অনেকে প্রথমে প্রতিষেধক নিলেও আগামিকাল মোদী শুধু উদ্বোধনী ঘোষণাটুকুই করবেন। এ দেশের রাজনীতিকদের উদ্দেশে মোদী কার্যত বার্তা দিয়েই রেখেছেন যে, প্রভাব খাটিয়ে বা অন্য কোনও উপায়ে আগেভাগে টিকা নেওয়া চলবে না। যদিও সাংসদদের মধ্যে সম্ভবত কালই প্রথম প্রতিষেধক পেতে চলেছেন উত্তরপ্রদেশের গৌতম বুদ্ধ নগরের সাংসদ মহেশ শর্মা। পেশায় চিকিৎসক ওই সাংসদের নিজস্ব হাসপাতাল থাকায় তিনি গোড়া থেকেই কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় যুক্ত ছিলেন। তাই তাঁর নাম প্রথম তালিকায় এসেছে বলে দাবি করেছেন মহেশ।
কিছুটা নিয়ম ভেঙেই আগামিকাল গোয়া মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল তাদের একশো জন সাফাইকর্মীকে প্রতিষেধক দেবে। বলা হয়েছে, কাজের ক্ষেত্রে তাঁদের ঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত। দিল্লিতে প্রথম দিনে ৮১টি কেন্দ্রের মধ্যে ছ’টিতে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধক দেওয়া হবে। ৭৫টিতে ব্যবহার হবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার কোভিশিল্ড। প্রত্যেকে যাতে ২৮ দিনের ব্যবধানে একই প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় পান, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে। অসমের ৬৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫৯টিতে কোভিশিল্ড ও ছ’টিতে কোভ্যাক্সিন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। পশ্চিমবঙ্গে প্রতিষেধক দেওয়া হবে ২১০টি কেন্দ্রে। টিকা নেওয়ার আগে আধার অথবা অন্য ১২টি পরিচয়পত্রের (ড্রাইভিং লাইসেন্স, ব্যাঙ্ক/ ডাকঘরের পাসবুক, প্যান বা ভোটার কার্ড) যে কোনও একটি দেখালেই চলবে।
আরও পড়ুন: মোদী-ঘনিষ্ঠ আদানিকে তোপ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীরও
তবে প্রতি একশো জনের মধ্যে এক জনের প্রতিষেধক নেওয়ার পরে সামান্য শারীরিক অসুবিধে হতে পরে বলে আগেই সতর্ক করে রেখেছে কেন্দ্র। সেই কারণেই প্রতিটি কেন্দ্রে একটি পর্যবেক্ষণ কক্ষ রাখা হয়েছে। সেখানে প্রতিষেধক পাওয়ার পরে আধ ঘণ্টা বসতে হবে। ইঞ্জেকশনটি নেওয়ার জায়গায় ব্যথা, শক্ত হয়ে ফুলে ওঠা, মাথা ঘোরা, বমি ভাবের মতো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে ভয়ের কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন চিকিৎসকেরা। কোন কোন বিশেষ অবস্থায় প্রতিষেধক নেওয়া উচিত নয়, কাদের টিকাকরণের সময়ে বিশেষ যত্ন নিতে হবে— এই সব নিয়ে আজ ফের একগুচ্ছ নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: ভোটার-তথ্য টিকার কাজে