প্রতীকী ছবি
ভারতকে বিশ্বের ওষুধ কারখানা করে তোলার লক্ষ্যে ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরির তিনটি পার্ক তৈরির পরিকল্পনা সোমবার ফের ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। জানিয়েছে, তার জন্য বাড়তি সুবিধা দেওয়া হবে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিকে। কিন্তু যে শর্তে রাজ্য বাছাইয়ের কথা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, তাতে ওই সমস্ত রাজ্য এই ক্ষেত্রে কী ভাবে লগ্নির গন্তব্য হয়ে উঠতে পারবে, ধন্দ তা ঘিরেই।
ওই নির্দেশিকা অনুযায়ী, যে সমস্ত রাজ্যে শেষ পর্যন্ত ওষুধ তৈরির ওই তিন পার্ক হবে, তাদের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে প্রকল্পের খরচ বইবে কেন্দ্র। উত্তর-পূর্ব এবং পাহাড়ি এলাকার রাজ্য হলে, তারা প্রকল্পের খরচের ৯০% পাবে। অন্য রাজ্য ৭০%। কেন্দ্রের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বণিকসভা ফিকি। গোড়ার থেকেই উন্নয়নে পিছিয়ে থাকা উত্তর-পূর্বে লগ্নি আনার কথা বলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, পার্ক তৈরির জন্য রাজ্য বাছাইয়ের যে পদ্ধতি নির্দেশিকায় রয়েছে, তাতে কি চট করে উতরাতে পারবে উত্তর-পূর্বের কোনও রাজ্য?
বিনিয়োগ টানতে ইচ্ছুক রাজ্যগুলিকে শুরুতেই প্রকল্পের জন্য সস্তায় জমি, অবিচ্ছিন্ন জল ও বিদ্যুৎ সংযোগ, উন্নত পরিবহণ পরিকাঠামো ইত্যাদি দেখাতে হবে। তার পরে চূড়ান্ত বাছাই হবে সহজে ব্যবসা করার (ইজ় অব ডুয়িং বিজ়নেস) ক্রম তালিকায় ওই রাজ্যের স্থান, তাদের তরফ থেকে বিভিন্ন আর্থিক সুযোগ-সুবিধার বহর, সেখানে অন্য ওষুধ কিংবা রাসায়নিক শিল্পতালুক থাকা ইত্যাদির ভিত্তিতে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তা হলে আর শিল্পোন্নত রাজ্যের সঙ্গে কী ভাবে চট করে এঁটে উঠতে পারবে উত্তর-পূর্ব কিংবা অন্য পিছিয়ে থাকা রাজ্য? এই মাপকাঠি মানলে তো ক্রমশ বরং চওড়া হতে থাকবে শিল্পোন্নত এবং শিল্পে পিছিয়ে থাকা রাজ্যের ফারাক!
শিল্প জগতের একাংশের অবশ্য দাবি, যে কোনও সংস্থা ওষুধের মতো শিল্পে টাকা ঢালার আগে ওই সব সুবিধা চাইবেই। যাতে কম সময়ে কারখানা গড়া যায়। সেই সঙ্গে ওষুধ তৈরির খরচ কম রেখে টেকা যায় আন্তর্জাতিক বাজারের প্রতিযোগিতায়। তাই সে দিক থেকে এই নির্দেশিকা অযৌক্তিক নয় বলে তাদের মত।