প্রতীকী ছবি।
লোকসভা ভোটের আর এক বছরও বাকি নেই। এক দিকে দেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তাপ যখন ক্রমশ বাড়ছে, তখন ভারত-পাক সীমান্তে ও নিয়ন্ত্রণরেখা জুড়ে শুরু হয়েছে বড় মাপের সেনা তৎপরতা। বিশেষ ভাবে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে বায়ুসেনাকে।
নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভোটের মুখে সেনার ওই সাজো সাজো রবে, প্রশ্ন উঠছে, তবে কি ভোটের আগে পাকিস্তানের সঙ্গে ছোট মাপের হলেও সংঘর্ষে যেতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। স্বরাষ্ট্র থেকে প্রতিরক্ষা— সব মন্ত্রকই অবশ্য একে রুটিন বিষয় বলে এড়িয়ে গিয়েছে।
কেন্দ্র বলছে, গরম পড়তেই গোটা ৭৭৮ কিলোমিটার দীর্ঘ নিয়ন্ত্রণরেখা জুড়েই জারি হয়েছে সতর্কতা। কেন্দ্র বলছে, এটি হল আগাম সতর্কতা। কারণ পাহাড়ে বরফ গলতেই ভারতে জঙ্গি ঢোকাতে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। পিছন থেকে সাহায্য করছে পাক সেনাও। জঙ্গিদের অনুপ্রবেশে সাহায্য করতে সীমান্তে ভারতীয় চৌকি নিশানা করে মর্টার হানা চালানো হচ্ছে। পাল্টা জবাব দিতেই নিয়ন্ত্রণরেখা ও সীমান্ত জুড়ে বাড়ানো হয়েছে সেনার সংখ্যা ও অস্ত্রসম্ভার। পিছিয়ে নেই পাকিস্তানও। সে দেশের কোটলি, মিরপুর, এমনকি রাওলপিন্ডি থেকেও পূর্ব প্রান্তে সেনা পাঠানো শুরু করেছে ইসলামাবাদ।
কেন্দ্র রুটিন বিষয় বললেও, শাসক শিবিরের একাংশ বলছে, লোকসভার আগে জাতীয়তাবাদের আবেগ উস্কে দিতে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতীয় সেনার বড় মাপের কোনও অভিযানের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বর্তমান সেনা তৎপরতা সেই প্রস্তুতির অঙ্গ। এমন অভিযানের মূল লক্ষ্যই হবে পাক এলাকার জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরগুলিকে পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দেওয়া। দীর্ঘদিন ধরে ওই দাবি রয়েছে বিজেপির অন্দরে।
দল মনে করে ও-পারের জঙ্গি শিবির ধ্বংস করা গেলে দেশের লাভ, ফায়দা দলেরও। লোকসভা ভোটেও তার সুফল মিলবে। তবে পাল্টা হামলার আশঙ্কাও থাকছে। বিশেষ করে পাকিস্তান যেখানে পরমাণু শক্তিধর দেশ। আগাম সতর্কতা হিসেবে তাই বিশেষ ভাবে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে বায়ুসেনার ওয়েস্টার্ন এয়ার কম্যান্ডকেও। তাদের অধীনে থাকা এলাকায় ১৮টি এয়ারবেস রয়েছে। তাদের প্রত্যেকটিকে ২৪ ঘণ্টা সতর্ক থাকার জন্য ‘হাই এলার্ট’ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি বেসে তিন থেকে চারটি বিমানকে ‘অপারেশনাল রেডিনেস’ পর্যায়ে রাখতে বলা হয়েছে। যাতে আক্রমণ হলে নিমেষে জবাব দেওয়া যায়। চলতি সপ্তাহেই উত্তরকাশীতে বায়ুসেনার অপারেশন গগন শক্তি-র পরে ওই জল্পনা তীব্র হয়েছে আরও।