ফাইল ছবি
দুধ না খেলে, হবে না ভাল ছেলে!
এই পর্যন্ত কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু দুধের বদলে অন্য কিছু খেলে আরও ভাল হবে, বুদ্ধি বাড়বে, লম্বা হওয়া যাবে বলে অনেক বিজ্ঞাপনই তৈরি হয়। যা দেখে শিশুরা দোকানে গিয়ে তা কেনার জন্য বায়না ধরে।
আজ কেন্দ্রীয় সরকার এ বিষয়ে কড়া নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দিল, এই ধরনের কোনও বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন আর দেওয়া যাবে না। বিজ্ঞাপনে শিশুদের খাবারের পণ্যে তার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে মিথ্যে দাবি করা চলবে না। প্রাকৃতিক বা চিরাচরিত খাবারের থেকে এই খাবারের পুষ্টিগুণ বেশি বলে বিজ্ঞাপন করা যাবে না। পণ্য সম্পর্কে কোনও দাবি করা হলে সেই দাবির উৎস কী, তা জানাতে হবে। এই সব পণ্যের সঙ্গে বিনামূল্যের উপহার জুড়ে দিয়ে বা প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগের লোভ দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিয়ে শিশুদের পণ্য বিক্রি করার চেষ্টাও চলবে না।
বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন, লুকিয়ে অন্য পণ্যের বিজ্ঞাপন নিয়ে বিস্তারিত নির্দেশিকা জারির পরে আজ কেন্দ্রীয় উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রকের সচিব রোহিতকুমার সিংহ চিত্রতারকা, ক্রীড়াবিদদের মতো বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদেরও সতর্ক করে বলেছেন, তাঁরাও যে কোনও পণ্যের প্রচারে নাম লেখানোর আগে ওই পণ্য সম্পর্কে বিজ্ঞাপনে কী দাবি করা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখে নেন। সচিব বলেন, “এই বিখ্যাত মানুষদের দেখে অনেকেই প্রভাবিত হন। ফলে তাঁরা যে সব কথা বিজ্ঞাপনে বলছেন, তা নিয়ে একটু হোমওয়ার্ক করে নেওয়া দরকার।’’
উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রকের নির্দেশ, কোনও পণ্যের ক্ষেত্রেই কোনও মিথ্যে দাবি করা যাবে না। অনেক ক্ষেত্রে বিখ্যাত ব্যক্তি যে সংস্থার বিজ্ঞাপন করছেন, সেই সংস্থার মালিকানায় তাঁর অংশীদারিও থাকে। সে ক্ষেত্রে তা-ও স্পষ্ট ভাবে জানাতে হবে বলে সরকারের নির্দেশ। নির্দেশিকা মানা না হলে কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ পণ্য প্রস্তুতকারী সংস্থা, বিজ্ঞাপনদাতা ও যিনি বিজ্ঞাপন করছেন, তাঁদের উপরে বিভ্রান্তিমূলক বিজ্ঞাপনের অভিযোগে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা ধার্য করতে পারে। প্রথম বার অপরাধের ক্ষেত্রে এক বছর পর্যন্ত জেল, দ্বিতীয় বার আইন ভাঙলে তিন বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।
মদের বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে মদ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি সরাসরি বিজ্ঞাপন দিতে পারে না বলে অনেক সময়ই ওই সংস্থার সোডা জাতীয় পানীয়ের বিজ্ঞাপন করে। এই ধরনের ছদ্ম-বিজ্ঞাপনের উপরেও আজ নিষেদ্ধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এখন বহু সংস্থাই একটির সঙ্গে একটি ফ্রি বা বেশ কিছু দিনের জন্য বিপুল ছাড়ে কেনাকাটার সুযোগের বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রেও বিজ্ঞাপনে যে সব দাবি করা হচ্ছে, তার সত্যতা নিশ্চিত করতে শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
অনলাইন কেনাবেচার পোর্টালগুলিতে মিথ্যে মতামত বা ‘রিভিউ’ আটকাতেও সম্প্রতি সচেষ্ট হয়েছে কেন্দ্র। কারণ এই ‘রিভিউ’ পড়েই মানুষ অনলাইনে কেনাকাটার সিদ্ধান্ত নেন। এ বিষয়ে সকলের মতামত জানার জন্য একটি সরকারি কমিটি তৈরি হয়েছে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।