শুক্রবার মুম্বইয়ের বান্দ্রা কুর্লা কমপ্লেক্সের জিও গার্ডেনে এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে আলোচিত গ্র্যান্ড রিসেপশনটি সেরে ফেললেন ইশা আম্বানী ও আনন্দ পিরামল। ছিল অনুষ্ঠান ও খাওয়াদাওয়ার এলাহি আয়োজন। এ দিনও নবদম্পতিকে শুভেচ্ছা জানাতে আসেন অসংখ্য বলিউডি তারকা, শিল্পপতি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
রিসেপশনের কার্ডে ইশা ও আনন্দ দু’জনেই নিজেদের ঠাকুমা কোকিলা মাম্মি ও ললিতা দিদির কথা উল্লেখ করেছেন। জীবনে তাঁদের অবদানকে সম্মান করতেই এই সিদ্ধান্ত। রিসেপশন শুরু হয় ঠিক সন্ধে ৭ টায়। বিয়ের দিন সাবেকি পোশাকের কথা বলা থাকলেও এ দিন ফর্মাল পোশাকই ছিল ড্রেস কোড।
রিসেপশনের দিন সোনালি ও আইভরি রঙের ডিজাইনার লেহঙ্গায় সেজেছিলেন ইশা। সোনালি-রুপোলি ফ্লোরাল মোটিফ আঁকা এই লেহঙ্গা ভারতীয় কোনও ডিজাইনারের বানানো নয়। সুদূর ইতালির ফ্যাশন হাউজ ‘ভ্যালেন্তিনো’ তাঁর জন্য এই বিশেষ পোশাক বানিয়েছেন। আনন্দের পরনে ছিল কালো জমকালো স্যুট। দু’জনকেই খুব সুন্দর দেখাচ্ছিল এই দিন।
এ দিন ছিমছাম মেক আপে সাজেন ইশা। এই হালকা মেক আপে তাঁকে যেমন সুন্দর দেখাচ্ছেল, তেমনই তাঁর পোশাক ও গহনা এতে আরও বেশি করে চোখে পড়ছিল।
ইশার ঠাকুমা কোকিলাবেন আম্বানীও নাতনির বিয়ের রিসেপশন চুটিয়ে উপভোগ করেছেন। বউমা নীতার সঙ্গে ফোটো সেশনেও ছিলেন খুবই সপ্রতিভ।
ছেলে আকাশ ও হবু পুত্রবধূ শ্লোক মেহতার সঙ্গে মেয়ের রিসেপশনের দিন পোজ দিতে দেখা গেল নীতা অম্বানীকে। পরে কেবল আকাশ ওশ্লোক একসঙ্গে নানা পোজে ছবি তোলেন।
সব ব্যস্ততা সরিয়ে ভাইঝির রিসেপশনে উপস্থিত ছিলেন অনিল অম্বানীও। আনন্দ পিরামলের বাবা অজয় পিরামল ও দাদা-বৌদি মুকেশ-নীতার সঙ্গে হাসিমুখে ধরা পড়লেন তিনি।
বিয়ে কেবল দু’জন মানুষ নয়, দুই পরিবারেরও বন্ধন। সে কথাই যেন মনে করিয়ে দিচ্ছে এই ছবি।
সন্ধে হতে না হতেই অতিথিদের ঢল নামে জিও গার্ডেনে। রিসেপশনে যোগ দিতে এসে হেমা মালিনি তাঁর দুই কন্যা ও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে ছবিও তুললেন। অসাধারণ সাজে তাঁরা প্রত্যেকেই হয়ে উঠেছিলেন গ্ল্যামারাস! হেমা মালিনির এভারগ্রিন বিউটি যেন অনুষ্ঠানের ঝলক বাড়িয়ে দেয় আরও কয়েক গুণ।
জমকালো সোনালি পোশাকে দিয়া মির্জাও এলেন তাঁর স্বামী সাহিল সঙ্ঘের সঙ্গে। নীল ফর্মালে হ্যান্ডসাম সাহিলকে আরও গ্ল্যামারাস দেখাচ্ছিল। সাহিল ও দিয়ার যৌথ উপস্থিতি এ দিনের সন্ধেকে আরও আনন্দঘন করে তোলে।
মেরুন রঙের সালোয়ার-কুর্তা ও কোট পরে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন আইপিএস ও বর্তমানে পুদুচেরির লেফটেন্যান্ট গভর্নর কিরণ বেদীও।
ছেলে তুষার কপূর ও মেয়ে একতা কপূরের সঙ্গে এ দিন হাজার ছিলেন জিতেন্দ্রও। অনুষ্ঠানে অংশও নিলেন তাঁরা। কালো শেরওয়ানিতে বাবা ও ভাইয়ের মাঝে দুধসাদা পোশাকে একতার উপস্থিতি এই পার্টিকে আরও জমকালো করে তোলে।
বলিউডের অন্যতম উজ্জ্বল উপস্থিতির মধ্যে নীল নিতিন মুকেশও ছিলেন। যখন অনুষ্ঠান কিছুটা গড়িয়েছে, তখনই বাবার সঙ্গে জিও কমপ্লেক্সে হাজার হলেন নীল। এ ছাড়াও সুভাষ ঘাই, বোমান ইরানি, মধুর ভান্ডারকর, আদনান শামি প্রমুখরা সপরিবার উপস্থিত ছিলেন এই অনুষ্ঠানে।
ধূসর ও কালো রঙের স্ট্রাইপ কোট পরে একটু রাত বাড়তেই হাজির হলেন সানি দেওল। মঞ্চে তখন জমকালো সঙ্গীতানুষ্ঠান চলছে। অতিথিদের ভিড়ে মিশে খানিক নাচলেনও তিনি।
যখন ইশা ও আনন্দ অতিথিদের আপ্যায়ণে ব্যস্ত ছিলেন, তখন জাভেদ আলি ব্যস্ত ছিলেন তাঁর সুরেলা গলা দিয়ে অতিথিদের আনন্দ দিতে। জাভেদের গান এ দিন অনুষ্ঠানে আলাদা মাত্রা যোগ করে।
কেবল জাভেদ আলিই নন, এ দিনের মিউজিক কনসার্টে অংশ নেন এ আর রহমান, হর্ষদীপ কৌর, নীতি মোহন, আরমান মালিক, রেখা ভরদ্বাজ প্রমুখ। এই অনুষ্ঠান রিসেপশন পার্টির জমক আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। অতিথিরা অনেকেই পা মেলান গানের সঙ্গে।
একটু রাতের দিকে স্ত্রী বলিউড অভিনেত্রী সাগরিকা ঘাটগের সঙ্গে অনুষ্ঠানে এলেন ভারতীয় ক্রিকেটার জাহির খান। দু’জনেই ম্যাচিং করে কালো পোশাকে সেজেছিলেন। এ দিন গানের জলসাতেও মেতে উঠলেন দু’জন।