ছবি: সংগৃহীত।
রাজ্যে সিবিআই তদন্ত করতে গেলে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের সম্মতি আবশ্যক বলে এক রায়ে মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের মতে, এই নীতি সংবিধানের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর সঙ্গেও সঙ্গতিপূর্ণ।
উত্তরপ্রদেশে এক দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের ক্ষেত্রে রাজ্যের আগাম অনুমতি নেওয়া হয়নি, এই যুক্তিতে ওই মামলায় সিবিআই তদন্তের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন অভিযুক্তেরা। সেই মামলার রায়েই এই মন্তব্য করেছে শীর্ষ আদালত।
রাজ্য সরকারের সুপারিশ বা হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছাড়া সিবিআই রাজ্যে তদন্ত করতে পারে না। তবে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই সরাসরি তদন্ত করতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রেও তল্লাশির ক্ষেত্রে রাজ্যের অনুমতি প্রয়োজন। তাই রাজ্যগুলি সিবিআইকে ‘জেনারেল কনসেন্ট’ দিয়ে রাখে। কিন্তু সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদী সরকার ও কয়েকটি রাজ্যের সম্পর্কে অনাস্থা দেখা দিয়েছে। ফলে পঞ্জাব, ঝাড়খণ্ড, কেরল, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ় ও মিজোরাম জেনারেল কনসেন্ট প্রত্যাহার করেছে। অন্ধ্রপ্রদেশও তা প্রত্যাহার করেছিল। কিন্তু সে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে ফের জেনারেল কনসেন্ট দিয়েছে জগন্মোহন রেড্ডি সরকার। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের রায় তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত সংশ্লিষ্ট সব শিবিরের। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ।
আরও পড়ুন: প্রযুক্তি-সমাধানে ‘ভারত-নির্ভরতা’ চান মোদী
‘দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট’ মেনে চলে সিবিআই। সেই আইনের ৫ ও ৬ নম্বর ধারা ব্যাখ্যা করে বিচারপতি এ এম খানউইলকর ও বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের বেঞ্চ জানিয়েছে, ৫ নম্বর ধারায় রাজ্যে সিবিআই তদন্ত শুরু করার অধিকার দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রকে। কিন্তু ৬ নম্বর ধারায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, সে ক্ষেত্রে রাজ্যের সম্মতি প্রয়োজন। বিচারপতিদের মতে, ‘‘স্পষ্টতই এই বিষয়টি সংবিধানে বর্ণিত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। ওই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো সংবিধানের মূল কাঠামোগুলির মধ্যে একটি।’’
আরও পড়ুন: ‘জোট বেঁধেছে শয়তানেরা’, তির বিপ্লবের
জেনারেল কনসেন্ট না থাকায় দু’মাস নতুন কোনও মামলা দায়ের করেনি কলকাতায় সিবিআইয়ের দুর্নীতি-দমন শাখা। কলকাতা হাইকোর্ট অবশ্য এক রায়ে জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা বা তার কর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা আর্থিক অপরাধের তদন্তে জেনারেল কনসেন্ট থাকার প্রয়োজন নেই। পুরনো মামলার তদন্তও চালিয়ে যেতে বলেছে হাইকোর্ট। তার পরে বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত ও বিএসএফ কমান্ডান্ট সতীশ কুমারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে সিবিআই।