জোট ঘোষণার মুখেই সিবিআইয়ের খাঁড়া নামল অখিলেশের উপর

গত কাল রাতেই দিল্লিতে মায়াবতী-অখিলেশের বৈঠকে স্থির হয়েছে, দুই দল ৩৭টি করে আসনে লড়বে। বাকি ছ’টি আসন ‘ছোট দলের’ জন্য ছেড়ে রাখা হবে। এর পর দিনই সামনে এল অখিলেশের বিরুদ্ধে বালি খনন নিয়ে পুরনো মামলার প্রসঙ্গ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:০৮
Share:

সিবিআই নিশানায় অখিলেশ!

আসন্ন লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) এবং বিএসপি-র জোট যখন প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে ঠিক সেই সময়ই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার খাঁড়া নেমে আসার সম্ভাবনা তৈরি হল অখিলেশ সিংহ যাদবের উপর। সিবিআই সূত্রের খবর, শীঘ্রই উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা এসপি নেতা অখিলেশকে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হবে বেআইনি বালি খননের পুরনো মামলা নিয়ে।

Advertisement

গত কাল রাতেই দিল্লিতে মায়াবতী-অখিলেশের বৈঠকে স্থির হয়েছে, দুই দল ৩৭টি করে আসনে লড়বে। বাকি ছ’টি আসন ‘ছোট দলের’ জন্য ছেড়ে রাখা হবে। এর পর দিনই সামনে এল অখিলেশের বিরুদ্ধে বালি খনন নিয়ে পুরনো মামলার প্রসঙ্গ। একে মায়াবতীর পাশাপাশি অখিলেশকেও চাপে রাখার ছক বলেই মনে করছেন বিরোধীরা।

সিবিআইয়ের দাবি, ২০১২ থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত খনি দফতরের অতিরিক্ত দায়িত্ব ছিল তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশের হাতে। বুন্দেলখণ্ড এলাকায় ওই মামলার সঙ্গে জড়িত বারোটি জায়গায় আজ তল্লাশি করেছে সিবিআই। তার মধ্যে রয়েছে সমাজবাদী নেতা রমেশকুমার মিশ্র, আইএএস অফিসার বি চন্দ্রকলা-সহ কয়েক জনের বাড়ি। দুর্নীতি-বিরোধী লড়াইয়ের জন্য ‘লেডি দবং’ বলে ডাকা হয় বি চন্দ্রকলাকে। কিন্তু সিবিআইয়ের অভিযোগ, ২০১২-’১৪ সময়কালে হামিরপুরের জেলাশাসক পদে থাকাকালীন ই-টেন্ডার ব্যবস্থাকে এড়িয়ে খননের বরাত দিয়েছেন তিনি। এফআইআরে সিবিআই জানিয়েছে, ওই সময়ে খনিমন্ত্রীদের ভূমিকা নিয়েও তদন্ত হতে পারে। এতেই অখিলেশের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ২০১৬ সালের ২৮ জুলাই রাজ্যে বেআইনি খনন নিয়ে তদন্ত করতে সিবিআইকে নির্দেশ দেয় ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। ২০১৭ সালে শামলী ও কৌশাম্বী এলাকায় বেআইনি খনন নিয়ে দু’টি এফআইআর হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: দেশবাসী প্রশ্ন তুলুন রাফাল নিয়ে, ডাক রাহুলের

তল্লাশি: বেআইনি বালি খননের পুরনো মামলায় বুন্দেলখণ্ডের ১২টি জায়গায় সিবিআই হানা। ছবি: পিটিআই।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে একই ভাবে মায়াবতীর বিরুদ্ধেও পুরনো দুর্নীতি মামলায় তদন্তের হুমকি দিয়ে রেখেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এসপি এবং বিএসপি শিবিরের বক্তব্য, তাদের জোট ভাঙতে মরিয়া বিজেপি। তাই রক্তচক্ষু দেখিয়ে চাপ বাড়ানো হচ্ছে।

উত্তরপ্রদেশে জোটের ফলে কি সার্বিক আসন সংখ্যায় অনেকটাই পিছিয়ে যাবে নরেন্দ্র মোদীর দল?

আরও পড়ুন: ‘সরকার না মামা মিশেলের দরবার’

এসপি-র এক নেতার কথায়, ‘‘এই জোট হলে যে উত্তরপ্রদেশ থেকে বিজেপি ধুয়েমুছে যাবে এটা বুঝতে পেরেই এই কৌশল নেওয়া হয়েছে।’’ সে ক্ষেত্রে রায়বরেলী এবং অমেঠী ছেড়ে রাখা হবে কংগ্রেসের জন্য। বাকি ছ’টির মধ্যে কংগ্রেসকে ক’টি দেওয়া হবে তা নিয়ে এখনও কথা চলছে। উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা পি এল পুনিয়া অবশ্য জানান, তাঁরা ওই রাজ্যে একা লড়ার জন্য প্রস্তুত। তবে কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রের দাবি, রাহুল গাঁধীর অগ্রাধিকার উত্তরপ্রদেশ থেকে বিজেপিকে নির্মূল করা। তা হলে সার্বিক আসন সংখ্যায় অনেকটাই পিছিয়ে যাবে নরেন্দ্র মোদীর দল। এ নিয়ে অখিলেশের সঙ্গে আগেই কথা হয়েছে রাহুলের। যদি এসপি-বিএসপি জোটে কংগ্রেসের জন্য বরাদ্দ আসন না থাকে তা হলে কিছু আসনে হয়তো প্রার্থী দেবে কংগ্রেস। কিন্তু রাহুলের চেষ্টা থাকবে তাঁদের লড়াইটা যেন বিজেপির বিরুদ্ধে হয়, বিজেপি-বিরোধী জোটের বিরুদ্ধে নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement