অরবিন্দ কেজরীওয়াল। — ফাইল চিত্র।
আবগারি দুর্নীতিকাণ্ডে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিল সিবিআই। দিল্লির রাউস এভিনিউ আদালতে সোমবার পেশ করা হয়েছে চার্জশিট। এর আগে এই মামলায় একটি প্রধান এবং চারটি সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করেছিল সিবিআই। ওই চার্জশিটগুলিতে দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া, তেলঙ্গানার বিধান পরিষদের সদস্য কে কবিতা এবং অন্য কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল। সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার আবগারি দুর্নীতিকাণ্ডে যে চার্জশিট দিয়েছে তারা, সেটাই চূড়ান্ত। চার্জশিটে তারা দাবি করেছে, আপ প্রধানের নির্দেশেই দলের নেতাদের কোটি কোটি টাকা দিয়েছিলেন মদের ব্যবসায়ী, বদলে নিয়েছিলেন সুবিধা।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, কে কবিতার বিরুদ্ধে যে চার্জশিট পেশ করা হয়েছে, তাতে তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, ২০২১ সালের ১৬ মার্চ দিল্লির সচিবালয়ে কেজরীওয়ালের দফতরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন ব্যবসায়ী মাগুনতা শ্রীনিবাসুলু রেড্ডি। তিনি টিডিপি (তেলগু দেশম পার্টি)-র সাংসদও। রেড্ডি দিল্লিতে তাঁর মদের ব্যবসার প্রসারে সাহায্যের জন্য কেজরীর কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন বলে দাবি করেছে সিবিআই। সে সময় ২০২১-২২ আবগারি নীতির খসড়া তৈরির কাজ চলছিল। সেই নীতি যাতে সুবিধা পাইয়ে দেয়, সে জন্য তাতে অদলবদল চেয়েছিলেন রেড্ডি। সিবিআইয়ের আরও দাবি, এর পরেই কে কবিতার সঙ্গে রেড্ডিকে যোগাযোগ করতে বলেছিলেন কেজরী। দিল্লির আবগারি নীতির খসড়া তৈরিতে সাহায্য করছিলেন কবিতা। রেড্ডিকে পরিবর্তে নিজের দল আম আদমি পার্টিকে অনুদান দেওয়ার জন্য কেজরী অনুরোধ করেছিলেন বলে চার্জশিটে দাবি করেছে সিবিআই।
সিবিআই চার্জশিটে দাবি করেছে, কেজরীর কথা মেনে তাঁর দলের শীর্ষনেতা এবং সরকারি আধিকারিকদের প্রায় ৯০ থেকে ১০০ কোটি টাকা অনুদান হিসাবে আগাম দিয়েছিলেন রেড্ডি। আবগারি নীতিতে অদলবদল করার জন্য অভিযুক্ত বিজয় নায়ার, অভিষেক বইনপল্লি, দীনেশ অরোর মাধ্যমে ওই টাকা পাঠানো হয়েছিল বলে দাবি সিবিআইয়ের। পরিবর্তে রেড্ডিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে আবগারি নীতির খসড়া তৈরি করা হয়েছিল। সিবিআইয়ের দাবি, এর ফলে সুবিধা পেতে চলেছিলেন মদ উৎপাদনকারী, পাইকারি এবং খুচরো বিক্রেতারা। এই আবগারি দুর্নীতিকাণ্ডে গত মার্চ মাসে কেজরীকে গ্রেফতার করে ইডি। পরে তাঁকে হেফাজতে নেয় সিবিআই। শুক্রবার আপ দাবি করেছে, কেজরীর সঙ্গে ‘রাজনৈতিক বন্দি’-র মতো ব্যবহার করা হচ্ছে। আপের রাজ্যসভার সাংসদ সন্দীপ পাঠক দাবি করেছেন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ‘ষড়যন্ত্রের শিকার’।