ফাইল চিত্র।
আগামী বছরেই উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোট। নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে শাসক-বিরোধী-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তার মধ্যেই যোগী আদিত্যনাথের প্রধান বিরোধী অখিলেশ যাদব এবং তাঁর দল সমাজবাদী পার্টিকে বিপাকে ফেলে আজ নয়া মামলা রুজু করল সিবিআই। অখিলেশ জমানায় রাজধানী লখনউয়ে ১৫০০ কোটি টাকার গোমতী রিভারফ্রন্ট উন্নয়ন প্রকল্পের অনিয়মের অভিযোগ তুলে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার মামলা রুজু করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি।
তবে তদন্তের সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। অভিযোগ, ভোটমুখী রাজ্যে চিরাচরিত কৌশল অনুসরণ করেই সিবিআই নতুন উদ্যমে তদন্ত শুরু করেছে। প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল সমাজবাদী পার্টির আমলে। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ সিংহ যাদবকে এই মামলায় জড়ায়নি সিবিআই। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের একাংশের অনুমান, দুর্নীতির ধুয়ো তুলে ভোটের আগে অখিলেশের দলকে অপ্রস্তুত করতেই এই কৌশল নিয়েছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার।
প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল ২০১৪-১৫ সালে। যা ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত এই প্রকল্পের কাজ চলে। মোট ১৫১৩ টাকার প্রকল্পে খরচ হয় ১৪৩৭ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে পালাবদলের পরে যোগী আদিত্যনাথ ক্ষমতায় এসে জানান, প্রকল্পের ৯৫ শতাংশ টাকা খরচ হলেও কাজ এগিয়েছে ৬০ শতাংশ। এই নিয়েই ওঠে দুর্নীতির অভিযোগ। ওই বছরের নভেম্বরেই প্রথম বার তদন্ত শুরু করে সিবিআই।
সিবিআই জানিয়েছে, প্রকল্পে খরচ হওয়া ১৪৩৭ কোটি টাকার মধ্যে ১৩৫০ কোটি টাকা খরচ করা হয় ৩৭টি টেন্ডারের মাধ্যমে। তার মধ্যে ৩০টি টেন্ডারের আওতায় চুক্তি নিয়েই তদন্ত শুরু করা হয়।
আজ নয়া এফআইআর দায়েরের পরেই ৪২টি জায়গায় তল্লাশি চালায় সিবিআই। এর মধ্যে উত্তরপ্রদেশের ৪০টি এবং রাজস্থান ও
কলকাতার একটি করে জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। আজ সকাল থেকেই শুরু হয়
তল্লাশি অভিযান। প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত তিন মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার এবং ছ’জন সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ারের বাড়িও রয়েছে তল্লাশির আওতায়। মোট ১৮৯ অভিযুক্ত রয়েছে এই মামলায়। যার মধ্যে রয়েছেন ১৬ জন সরকারি ইঞ্জিনিয়ার (চাকুরিরত এবং অবসরপ্রাপ্ত মিলিয়ে)। ফরাসি সংস্থা অ্যাকিয়োটিক শো-এর নামও রয়েছে অভিযুক্তদের তালিকায়।
সিবিআই জানিয়েছে, অভিযুক্ত সরকারি আধিকারিকেরা সরকারি সম্মতি ছাড়াই ওই ফরাসি সংস্থাটির সঙ্গে ৫৫.৯৫ লক্ষ ইউরোর চুক্তি করেছিল গোমতী নদীতে ‘ওয়াটার শো’-এর উপকরণ সরবরাহ এবং নকশা তৈরি জন্য। অভিযোগ, কাজের বরাতের ক্ষেত্রে টেন্ডার প্রক্রিয়ার পরিবর্তে ফরাসি সংস্থাটি ওই কাজের জন্য যে অর্থ দাবি করেছিল, তা মেনে নিয়েই চুক্তি করা হয়।
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাজ্যের সেচ দফতরকেই নিশানা করেছে যোগী সরকার। এলাহাবাদ হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অলোক কুমার সিংহের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করে রাজ্য সরকার। প্রাথমিক তদন্তে ২০১৭ সালের ১৬ মে ওই কমিটি দুর্নীতির ইঙ্গিত দিয়েছিল। তার সুবাদেই সিবিআই তদন্তের পথে হাঁটে রাজ্য।