বিক্ষোভের আগুন চেন্নাইয়ে। সোমবার। ছবি: এএফপি।
কাবেরী নদীর জলবণ্টন নিয়ে আজও দিনভর উত্তপ্ত ছিল তামিলনাড়ুর নানা প্রান্ত। ‘কাবেরী ম্যানেজমেন্ট বোর্ড’ গঠন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কেন ঢিলেমি করছে, সেই প্রশ্ন তুলে আজ গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন দুই ডিএমকে কর্মী। পুলিশ দ্রুত গিয়ে তাঁদের আটকায়। এ দিকে, আজই এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র তামিলনাড়ু সরকারকে আশ্বাস দিয়েছেন, ওই রাজ্য যাতে তার প্রাপ্য জলের ভাগ পায়, আদালত সে দিকে নজর রাখবে।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তপ্ত গোটা তামিলনাড়ু। চেন্নাই, কোয়ম্বত্তূর, মাদুরাই, তিরুভারুরের মতো জায়গায় দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান বিরোধী দল ডিএমকে-র কর্মীরা। কিছু কিছু এলাকায় বিক্ষোভে সামিল হয় সিপিএম এবং বিভিন্ন কৃষক সংগঠনও। বিক্ষোভের মূল নিশানায় ছিল কেন্দ্রীয় সরকারি দফতরগুলি।
কোয়ম্বত্তূরে আজ পি টি মুরুগেসন এবং সিঙ্গাই সদাশিবম নামে দুই ডিএমকে কর্মী গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগানোর চেষ্টা করেন। পুলিশ তাঁদের থামিয়ে থানায় নিয়ে যায়। কাবেরী বোর্ড গঠনের দাবিতে কোয়ম্বত্তূরের জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় কৃষক সংগঠন। ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিনকে গত কাল কেন গ্রেফতার করা হয়, তা নিয়েও আজ বিক্ষোভ দেখানো হয় রাজ্যের বিভিন্ন অংশে। রেল অবরোধ হয় কোয়ম্বত্তূর, তিরুচিরাপল্লি, পুদুকোট্টাইয়ে। বিক্ষোভ পড়শি পুদুচেরিতেও। ৫ এপ্রিল তামিলনাড়ুতে বন্ধ ডেকেছে ডিএমকে।
গত ফেব্রুয়ারিতে কাবেরীর জল ভাগ নিয়ে চূড়ান্ত রায় দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। ১৬ ফেব্রুয়ারির সেই রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, ছ’সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে একটি ব্যবস্থা (স্কিম) তৈরি করতে হবে কেন্দ্রকে। গত ২৯ মার্চ সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কেন্দ্র কেন কোনও সদর্থক পদক্ষেপ করেনি, তা নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক দলগুলি। শাসক-বিরোধী দুই দলই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব। দু’দিন আগে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে ফের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় তামিলনাড়ু সরকার। একই দিনে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্রও। পিটিশনে কেন্দ্রের বক্তব্য ছিল, কাবেরী নিয়ে বোর্ড গঠনে আপত্তি রয়েছে কর্নাটক সরকারের। তামিলনাড়ু সরকার ঠিক তার বিপরীত মেরুতে। সুতরাং কাবেরী জলভাগ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিক আদালতই।
আরও পড়ুন: রামনবমীর সংঘর্ষে চিড় বিহার বিজেপিতে
তামিলনাড়ু সরকারের আর্জি শুনতে রাজি হয়ে আজ প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চ জানিয়েছে, তামিলনাড়ু তার প্রাপ্য জল যাতে পায়, তা দেখার দায়িত্ব আদালতের। সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, ১৬ ফেব্রুয়ারির রায়ে আদালত কেন্দ্রকে যে স্কিম বা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিল, তার মানে শুধু কাবেরী বোর্ড গঠন নয়। ৯ এপ্রিল মামলার ফের শুনানি। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়ে আজ রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন এডিএমকে সাংসদ এস মুথুকারাপ্পন। চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুকে ইস্তফাপত্র জমাও দেন তিনি। কিন্তু তাঁর সেই আবেদন সম্ভবত গ্রহণ করা হয়নি, কারণ আবেদনপত্রে কিছু ত্রুটি রয়েছে।