ফাইল চিত্র।
হিমাচল প্রদেশের কিন্নরে রেকংপিয়ো-শিমলা রোডের সে বাঁকটিতে পর্যটকেরা গাড়ি থামিয়ে নিসর্গ উপভোগ করেন, এখন সেখানেই ধস নেমে মৃত্যুর মিছিল। গতকালই বোল্ডার সরিয়ে ১০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। আজ আরও ৪ জনের দেহ পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন কিন্নরের ডেপুটি কমিশনার আবিদ হুসেন। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা বলা হচ্ছে ১৪। যাঁরা এখনও নিখোঁজ রয়েছেন, তাঁদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ— আজ ফের জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। ভাবনগর থানার এসএইচও জানিয়েছেন, এখনও ২৫ থেকে ৩০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁরা সম্ভবত পাহাড়ের ঢাল বেয়ে শতদ্রুর খাতে পড়া টন টন গাছ-পাথরের তলায় চাপা পড়ে রয়েছেন। লোকেন্দ্র সিংহ বৈদিক নামে শিমলার এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, তাঁর বাবার দেহ খুঁজে বার করেছেন উদ্ধারকারীরা। কিন্তু দেহের সঙ্গে মাথাটি নেই। মাথার খোঁজ এখনও মেলেনি।
ধসে রাস্তা ভেঙে যে ক’টি গাড়ি নদীখাতে পড়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছিল, তার বাইরে একটি বোলেরো গাড়িও ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখনও সেটির হদিস মেলেনি। তবে সাংলা থেকে উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বার-গামী হিমাচল পরিবহণের বাসটির খোঁজ মিলেছে বলে জানিয়েছেন রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের ডিরেক্টর সুদেশকুমার মোখতা। খাদে পড়ে বাসটি দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে। তার উপরে পড়েছে বিপুল পরিমাণ বোল্ডার ও গাছের গুঁড়ি। সে সব সরালে তবে তার মধ্যে কোনও আরোহী আটকে আছে কি না, সেটা বোঝা যাবে।
গতকাল রাত ১০টা নাগাদ উদ্ধারকাজ বন্ধ হয়েছিল। আজ ভোর ৬টা থেকে আইটিবিপি, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ), স্থানীয় পুলিশ এবং হোম গার্ডের যৌথ দল ফের উদ্ধারকাজ শুরু করে। উদ্ধার কাজে সাহায্যের জন্য কেন্দ্রের কাছে চারটি হেলিকপ্টার চেয়েছিল রাজ্য। কেন্দ্র সেগুলি পাঠালেও খারাপ আবহাওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারেনি কপ্টারগুলি।
ধসে মৃতদের প্রতি শোক জানিয়ে আজ রাজ্য বিধানসভায় দু’মিনিট নীরবতা পালিত হয়। নগরোন্নয়ন মন্ত্রী সুরেশ ভরদ্বাজ জানিয়েছেন, উদ্ধার কাজ তদারকির জন্য ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর এবং শিল্প ও পরিবহণমন্ত্রী বিক্রম সিংহ। দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন বিরোধী দলনেতা মুকেশ অগ্নিহোত্রী-সহ কংগ্রেসের তিন বিধায়কও। কেন বার বার কিন্নরে ধস নামছে এবং তা নিয়ন্ত্রণের জন্য কী কী পদক্ষেপ করা যায়, তা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন সিপিএম বিধায়ক রাকেশ সিংহ।