প্রত্যয়ী: নিজের লেখা বই হাতে তুষার ঋষি। —নিজস্ব চিত্র।
এক দিকে ক্যানসার, অন্য দিকে জীবনের হরেক চ্যালেঞ্জ— ২২০ পাতার বইয়ে সে সবের মোকাবিলা করে এগোনোর পথের হদিস দিলেন ক্যানসার আক্রান্ত পড়ুয়া। এ বছর সিবিএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে ৯৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে একইসঙ্গে বুঝিয়ে দিলেন, ওই পথেই মিলেছে সাফল্য।
রাঁচীর তুষার ঋষি। ‘দি পেসেন্ট পেসেন্ট’— তাঁরই বইয়ের প্রত্যেক পৃষ্ঠায় ক্যানসারের প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলে জীবন সংগ্রামের বাস্তব ছবি। পরীক্ষার প্রস্তুতির কথা।
রাঁচীর মেসরার বাড়ির বারান্দায় নিজের লেখা বই হাতে বসেছিলেন দিল্লি পাবলিক স্কুলের বছর আঠেরোর ছাত্র। তুষার বলেন, ‘‘ভয় পেয়ে পিছিয়ে গেলে কোনও কাজ হয় না। এটা আমার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছি।’’ তিনি জানান, তিন বছর আগে দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষার আগে তাঁর হাঁড়ে ক্যানসার ধরা পড়ে। সে বছর পরীক্ষা দিতে পারেননি। পরের বছর কেমোথেরাপি নিতে নিতেই পরীক্ষা দেন। তখনই প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় আরও ভাল ফল করতে হবে। তুষার জানান, ডান হাঁটুতে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হতো তাঁর। পরীক্ষায় জানা যায়, ক্যানসার হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাগের মাথায় অ্যাসিড, শাস্তি বাবা-মায়ের
অস্ত্রোপচারের পর নকল হাঁটু লাগানো হয়। কী ভাবে দু’বছর কেমোথেরাপির যন্ত্রণা সহ্য করে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন, সাফল্যের স্বপ্ন দেখছেন— বইয়ে সে সব কথা লিখেছেন তুষার। চেন্নাইয়ের একটি নামী প্রকাশক সংস্থা তাঁর বই প্রকাশ করেছে। এক ক্যানসার আক্রান্ত ছাত্র ওই বই পড়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ভাল নম্বর পেয়েছেন বলে জানতে পেরেছেন তুষার। তিনি বলেন, ‘‘ওই খবরে আমি খুব খুশি হয়েছি।’’
কেমোথেরাপি আপাতত বন্ধ থাকলেও, তিন মাস পরপর দিল্লিতে গিয়ে চেক-আপ করাতে হয় তাঁকে। খেতে হয় প্রচুর ওষুধ। তুষারের মা ঋতু অগ্রবাল বিআইটি মেসরার শিক্ষিকা। তিনি বলেন, ‘‘ওর মনের জোর খুব বেশি। আশা করি, ভবিষ্যতে সুস্থ হয়ে উঠে ও আরও ভাল কিছু লিখতে পারবে।’’