নির্ভয়া-কাণ্ডের ছায়া এ বার বেঙ্গালুরুতে। অফিসফেরতা এক তরুণীকে বাসে তুলে নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে, খুন করার হুমকি দেখিয়ে, গলায় ছুরি ধরে গণধর্ষণ করল ওই বাসেরই চালক এবং খালাসি। কলসেন্টারে কাজ করা ওই তরুণীকে রাতের শহরে ঘণ্টা তিনেক ঘুরিয়ে ফিরিয়ে গণধর্ষণ করে একটি মন্দিরের পাশে ফেলে রেখে পালায় তারা। গত শনিবারের এই ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠছে, দেশের এ-ওয়ান শহরগুলি রাত্রিবেলা মেয়েদের জন্য কতটা নিরাপদ? বেঙ্গালুরুর মতো টেক-সিটিতে কেন বার বার একই ঘটনা ঘটছে?
কী হয়েছিল সে দিন?
পুলিশ সূত্রে খবর, রাত তখন প্রায় ১০টা। অফিস থেকে বেরিয়ে বাড়ি ফেরার অটো ধরবেন বলে স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। হঠাত্ই একটি বেসরকারি মিনিবাস এসে দাঁড়ায় ওই স্ট্যান্ডে। বাসে চালক এবং খালাসি ছাড়া আর কেউ ছিল না সেই সময়ে। খালাসিটি প্রথমে তরুণীকে জিজ্ঞেস করে, তিনি কোথায় যাবেন? জবাবে তরুণী জানান, তিনি শহরের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে যাবেন। গন্তব্য জেনে তাঁকে বাসে উঠতে বলে ওই খালাসি। চালকও জোরাজুরি করে। কিন্তু, ফাঁকা ওই বাসে তাঁকে উঠতে বারণ করেন তরুণীর এক বন্ধু। রাত তেমন না হওয়ায় ওই তরুণী সেই আপত্তি গ্রাহ্য করেননি। বন্ধুকে জানান, কিছু হবে না!
এর পর বাস তাঁকে নিয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে শুরু করে। ঘণ্টা তিনেক পর নির্জন মেডিভালা এলাকায় বাস দাঁড় করায় চালক। তার পর গলায় ছুরি ধরে দু’জনে মিলে তাঁকে গণধর্ষণ করে। তরুণী প্রবল আপত্তি করায় গলায় ছুরি বসিয়ে খুন করার হুমকি দেয় তারা। এর পর তাঁকে কাছাকাছির একটি মন্দিরের সামনে নামিয়ে পালায় তারা।
তরুণী এর পর তাঁর বোন এবং বন্ধুদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। তাঁরা ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার করে তাঁকে পাশের সেন্ট জন হাসপাতালে নিয়ে যায়। সোমবার তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
গ্বালিয়র থেকে বেশ কিছু দিন আগে বেঙ্গালুরু এসেছিলেন ওই তরুণী। বোনের সঙ্গে শহরের দক্ষিণ-পূর্বের একটি জায়গায় থাকতেন তারা। কলসেন্টারেও কাজ পেয়েছেন বেশি দিন হয়নি। এর আগে ২০০৫-এ ভোরের শিফ্টে অপিস যাবেন বলে ট্যাক্সিতে উঠে চালকের হাতে ধর্ষিতা হয়েছিলেন প্রতিভা শ্রীকান্ত মূর্তি নামে এক কলসেন্টার কর্মী। তাঁকে খুনও করে ওই চালক।