সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গিয়েছে পড়াশুনার ধরন। বদলে গিয়েছে পড়ার বিষয়। বিগত এক দশকে উচ্চশিক্ষার পঠনপাঠনে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রফেশনাল কোর্স। যে কোর্সগুলি শিক্ষার্থীদেরকে বাস্তব প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে শুধুমাত্র কেরিয়ার তৈরিতেই সাহায্য করছে না, সেই সঙ্গে তৈরি করে দিচ্ছে ভবিষ্যতের রূপরেখাও।
কেরিয়ার তৈরির এই কোর্সগুলির মধ্যে একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে মিডিয়া, মার্কেটিং এবং কমিউনিকেশনের বিভিন্ন বিষয়। শেষ কয়েক বছরের পরিসংখ্যান বলছে, এই বিষয়গুলিতে প্রশিক্ষিত হওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট পেশায় খুব সহজেই প্রবেশ করতে পারছেন শিক্ষার্থীরা। যদিও চাহিদার তুলনায় দক্ষ কর্মী বা পেশাদারদের অভাব এখনও কিন্তু বেশ চোখে পড়ার মতো। ২০১০ সালে এবিপি প্রাইভেট লিমিটেড-এর উদ্যোগে সেই শূন্যস্থান পূরণ করে শিক্ষার্থীদের সুদক্ষ করে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে পথ চলা শুরু করে দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্যালকাটা মিডিয়া ইনস্টিটিউট (CMI)।
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে একের পর এক প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী কোর্স নিয়ে হাজির হয়েছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষাজগতের প্রেক্ষাপটে নিজেকে মেলে ধরার পাশাপাশি, ছকে বাঁধা গণ্ডি থেকে বের হয়ে জাতীয় স্তরে শিক্ষার্থীদেরকে মিডিয়া, মার্কেটিং এবং কমিউনিকেশনের বিভিন্ন বিষয়ে হাতে-কলমে সুদক্ষ করে তুলছে সিএমআই।
যাত্রা শুরুর কথা —
মিডিয়া, কমিউনিকেশন, মার্কেটিং, — ইত্যাদি বিষয়গুলিতে প্রশিক্ষিত, দক্ষ পেশাদার তৈরির উদ্দেশ্য নিয়েই পথ চলা শুরু করেছিল সিএমআই। সংস্থার সভাপতি সন্দীপ চৌধুরীর কথায়, “দেশের সর্ববৃহৎ বাংলা সংবাদপত্রের অংশ হওয়া সত্ত্বেও প্রথম থেকেই একটি বিষয় পরিষ্কার ছিল সিএমআই-এর কাছে। সংবাদ ও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে প্রবেশ নয়।” ২০১০ সালে প্রাথমিক পর্যায়ে দু’টি কোর্স নিয়ে শুরু হয় সিএমআই-এর যাত্রা। এর মধ্যে প্রথমটি হল বিজ্ঞাপনের উপরে ৬ মাসের একটি কোর্স। অপরটি হল পাবলিক স্পিকিং কোর্স।
বাজারে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ পেশাদারদের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সব থেকে পুরনো ম্যানেজমেন্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান — আইআইএসডব্লিউবিএম (IISWBM)-এর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে দু’টি নতুন কোর্স চালু করে সিএমআই। একটি হল ইন্টিগ্রেটেড মার্কেটিং কমিউনিকেশন ম্যানেজমেন্ট এবং অপরটি হল টেলিভিশন ম্যানেজমেন্ট। দু’টিই ছিল এক বছরের পূর্ণ সময়ের কোর্স।
সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে, শুরুর সময় থেকেই অভিজ্ঞ অধ্যাপক ও সফল পেশাদাররা এই বিষয়গুলি পড়ান। কোর্সগুলির সার্বিক গুরুত্ব বাড়াতে প্রথম থেকেই শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থাও করা হয়। এই ইন্টার্নশিপ থেকে প্রাপ্ত নম্বর যোগ হয় শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত মানপত্রে। ফলত ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে শিক্ষার পাশাপাশি বাস্তব অভিজ্ঞতা গ্রহণের পরিসর থাকে অনেকটাই বেশি। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পেয়ে কোর্সগুলিকে আরও সময়োপযোগী করে তোলা হয়।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে পথ চলা —
২০১৪-২০১৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি প্রাপ্তির পরে প্রাথমিক পর্যায়ে দু’টি স্পেশালাইজেশন কোর্স নিয়ে শুরু হয়েছিল ডিপ্লোমা ইন মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট। একটি হল ইন্টিগ্রেটেড মার্কেটিং কমিউনিকেশন ম্যানেজমেন্ট। অপরটি হল টেলিভিশন ম্যানেজমেন্ট। ২০১৬ সালে টেলিভিশন ম্যানেজমেন্টের পাঠ্যসূচীতে টেলিভিশনের পাশাপাশি যোগ হয় রেডিয়ো। এবং কোর্সটির নাম বদল করে রাখা হয় ব্রডকাস্ট ম্যানেজমেন্ট।
ডিজিটাল যুগে প্রবেশ —
যে সময়ে ক্যালকাটা মিডিয়া ইনস্টিটিউট (CMI) পথ চলা শুরু করেছিল, সেই সময়ে ব্যবসায়িক সমাজের কিছু সংখ্যক মানুষই ভবিষ্যতে ডিজিটাল মাধ্যমের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। সেই সময়ে গোটা দেশে হাতে গোনা কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ডিজিটাল মার্কেটিং পড়ানো হত। বলা যেতে পারে, পশ্চিমবঙ্গে ডিজিটাল মার্কেটিং সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষাপ্রদানের ক্ষেত্রে সিএমআই ছিল অন্যতম পথ প্রদর্শক।
পূর্ব ভারতে ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়মিতভাবে প্রচলিত হওয়ার বহু আগে, ২০১৩ সালে ডিজিটাল কনক্লেভের আয়োজন করে এই প্রতিষ্ঠান। সন্দীপ চৌধুরীর কথায়, “ওই সময় কেউ এই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা ভাবতেও পারেনি। সেই ওয়ার্কশপে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকের মধ্যে উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। সেই সময়েই আমরা ডিজিটাল ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ প্রদানের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব অনুভব করতে পারি।” এর পরে ইন্টারনেট অ্যান্ড মোবাইল অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (আইএমএআই)-র সঙ্গে গাঁটছড়া বেধে স্বল্প সময়সীমার একটি কোর্স চালু করা হয়। বিভিন্ন সংস্থার ম্যানেজাররা এই কোর্সে অংশ নিয়ে থাকেন। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত কর্মীদের চাহিদার কথা ভেবেই ২০১৭-২০১৮ সালে আরও একটি বিষয়কে মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট ডিপ্লোমার অন্তর্ভূক্ত করা হয় — ডিজিটাল মার্কেটিং এবং সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট।
মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট কোর্সের বিষয়সমূহ! —
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত এই ডিপ্লোমা কোর্সের দু’টি স্বতন্ত্র ভাগ রয়েছে। প্রথমটি হল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের সাধারণ বিষয়। যার মধ্যে রয়েছে বিজনেস ইকোনমিকস, কমিউনিকেশন সায়েন্স, ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, সেলস ম্যানেজমেন্ট, কালচার এবং কমিউনিকেশন, রিসার্চ মেথডোলজি, ইভেন্টস ইত্যাদি। দ্বিতীয় ভাগটিতে রয়েছে স্পেশালাইজেশনের বিষয়। যেগুলি হল –
ইন্টিগ্রেটেড মার্কেটিং কমিউনিকেশন ম্যানেজমেন্ট
ব্রডকাস্ট ম্যানেজমেন্ট
ডিজিটাল মার্কেটিং এবং সোশ্যাল মিডিয়া
এই বিষয়গুলি ছাড়াও, সিএমআই(CMI)-এর পাঠ্যক্রমে প্রফেশনাল সার্টিফিকেট কোর্সের অধীনে বিভিন্ন প্রফেশনাল কোর্স অন্তর্ভুক্ত রয়েছে; যেমন, অ্যাঙ্করিং, ডিজিটাল ভিডিয়ো এডিটিং এবং ডিজিটাল সিনেমাটোগ্রাফি ইত্যাদি। শর্ট টার্ম কোর্সগুলি মূলত প্রাপ্তবয়স্ক, মিডল-স্কুল ও হাই-স্কুলের শিক্ষার্থীদের কমিউনিকেশন স্কিল বৃদ্ধি করতে তৈরি করা হয়েছে।
শুরুর পরে পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় এক দশকেরও বেশি সময়। ধীরে ধীরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে সিএমআই। বর্তমানে মিডিয়া, মার্কেটিং ও কমিউনিকেশন শিক্ষাজগতে কলকাতা মিডিয়া ইনস্টিটিউট অন্যতম সেরা একটি নাম। নিজ আঙ্গিকে গড়ে তোলা এখানকার প্রতিটি কোর্স শিক্ষার্থীদের কেরিয়ার তৈরির জন্য যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক এবং সেই কারণেই প্রতি বছর প্রচুর শিক্ষার্থী এই কোর্সগুলির প্রতি ভীষণভাবে আগ্রহ প্রকাশ করে। এর নেপথ্যে আরও একটি বড় কারণ হল, এই কোর্সগুলি পাশ করার পরে শিক্ষার্থীরা গণমাধ্যম, বিভিন্ন সৃজনশীল এজেন্সি, বিজ্ঞাপন সংস্থা, টেলিভিশন চ্যানেল, রেডিও স্টেশন, বড় কর্পোরেট সংস্থার কর্পোরেট কমিউনিকেশন পেশাদার কিংবা মার্কেটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং বা সেলস ফাংশনের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহজেই চাকরির সুযোগ পায়।
এক নজরে ক্যালকাটা মিডিয়া ইনস্টিটিউটে বর্তমানে যে যে কোর্স পড়ানো হয় —
পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা কোর্স
মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট – স্পেশালাইজেশন ইন -
প্রফেশনাল সার্টিফিকেট কোর্স –
শর্ট টার্ম কোর্স
এই প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা বর্তমানে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন নামী সংস্থায় কর্মরত। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বর্তমানে সফল উদ্যোক্তা। কোর্সগুলির সম্পর্কে বিশদে জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে — https://cmi.net.in/
যোগাযোগ: ৯০৫১৬৫৩৮৭৭ / ৯৮৩১২৩০৯৮৮
ঠিকানা: ৫০১ এলগিন চেম্বার্স, পঞ্চম ফ্লোর, ১এ, আশুতোষ মুখার্জি রোড, কলকাতা - ৭০০০২০
এই প্রতিবেদনটি ক্যালকাটা মিডিয়া ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।