‘চলো পাল্টাই’ অভিযান ঘিরে অশান্তির আশঙ্কা

কলকাতার গর্গ চট্টোপাধ্যায়, অসমের শান্তনু মুখোপাধ্যায় ও দিল্লির চন্দন চট্টোপাধ্যায় নামে ওই তিন জন এই প্রচারের মূল উদ্যোক্তা। রাজ্য তৃণমূল জানিয়েছে, ওই আন্দোলনের সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৯ ০৪:০২
Share:

‘অসমে বাংলাভাষা ও বাঙালিদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য’ কয়েকজন বাঙালির নেতৃত্বে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ‘চলো পাল্টাই’ অভিযান শুরু হয়েছে তাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে রাজ্যে। এর সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের নামও। অসম সাহিত্য সভা ও বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন অসম পুলিশের কাছে ওই অভিযানের নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

Advertisement

কলকাতার গর্গ চট্টোপাধ্যায়, অসমের শান্তনু মুখোপাধ্যায় ও দিল্লির চন্দন চট্টোপাধ্যায় নামে ওই তিন জন এই প্রচারের মূল উদ্যোক্তা। রাজ্য তৃণমূল জানিয়েছে, ওই আন্দোলনের সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই। অসমের সংগঠনগুলির দাবি, চন্দনবাবু লোকসভা ভোটের সময় তৃণমূলের হয়ে কাজ করেছিলেন। গর্গ তৃণমূলের একজন নেতা। শান্তনুবাবু ভারতীয় গণ পরিষদের হয়ে লোকসভায় লড়েওছিলেন। কিন্তু রাজ্য তৃণমূল জানিয়েছে, চলো পালটাইয়ের সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই। ওই ‘আন্দোলন’-এর আঁচ যাতে অসমের বাঙালিদের গায়ে না লাগে, সেই লক্ষ্যে প্রথমেই রুখে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় বাঙালি সংগঠনগুলি। বাঙালি সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চের তরফে অভিযোগ করা হয়, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর পিছনে থাকতে পারেন। আজ সারা অসম বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশন, বেঙ্গলি টাইগার ফোর্স, বৃহত্তর অসম বাঙালি উন্নয়ন সমিতি-সহ ৬টি সংগঠন একত্রে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, এনআরসি ও ডি-ভোটারের নামে বাঙালিদের বিরুদ্ধে চলা অত্যাচার, চক্রান্তের বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই চলছে। কিন্তু এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী উগ্র বাঙালির নেতৃত্বে চলা অভিযানকে তাঁরা সমর্থন করেন না। এই চক্রান্তে বাঙালিদের পা না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে যৌথ মঞ্চ। সাহিত্য সভার মতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন অসম ও অসমীয়া ভাষা বিরোধী প্রচার বিপজ্জনক। পুলিশের অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এ প্রসঙ্গে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব বিল পাশ হলে অসমের সরকারি ভাষা অসমীয়াই বিপন্ন হয়ে পড়বে।’’ আসুর সাধারণ সম্পাদক লুরিণজ্যোতি গগৈয়ের মতে, এই অভিযান অসমের বাঙালিদের তরফে শুরু করা হয়নি। বিচ্ছিন্ন কয়েক জনের চক্রান্ত।

তথ্য-অধিকার কর্মী দুলাল বরা ‘‘চলো পাল্টাই’-এর বিরুদ্ধে পুলিশে একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন। অসমীয়া যুব মঞ্চও ওই তিন নেতার নামে বিভিন্ন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে পুলিশ জানিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলা ভাষার পক্ষে মতামত প্রকাশ করলেও এখনই গ্রেফতার করার মতো কোনও মন্তব্য তাদের চোখে পড়েনি। পাশাপাশি, এই প্রচারের নেতা শান্তনু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যম ও বিজেপি খামোখা বিষয়টি নিয়ে হইচই করছে। আমরা অসমে ডি-ভোটার ও ডিটেনশন শিবিরের অত্যাচার নিয়ে সরব হয়েছি। জাতি-ভাষা নির্বিশেষে সকলের সব নথি যাচাই করার দাবি তুলেছি। বাঙালিদের অধিকারের জন্য আওয়াজ তোলা অন্যায় হতে পারে না।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement