—ফাইল চিত্র।
জিএসটি চালুর পরে দু’বছর রাজ্যগুলির প্রাপ্য ক্ষতিপূরণের থেকে সেস বাবদ বেশি আয় হয়েছিল। সেস বাবদ আয়ের তহবিল থেকে মোদী সরকার ৪৭,২৭২ কোটি টাকা সরিয়ে অন্যত্র খরচ করেছে বলে সরকারের হিসেব পরীক্ষক সংস্থা সিএজি আগেই আঙুল তুলেছিল। সিএজি রিপোর্ট দিয়ে বলেছিল, এ কাজ করে মোদী সরকার আইন ভেঙেছে। জিএসটি-ক্ষতিপূরণ তহবিল থেকে সরিয়ে নেওয়া সেই অর্থের কতটা মোদী সরকার আবার ফিরিয়ে দিয়েছে, এ বার তা নিয়ে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিতে প্রশ্ন উঠল।
সরকারি সূত্রের খবর, জিএসটি-ক্ষতিপূরণ নিয়ে আজ কংগ্রেসের অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিতে আলোচনা হয়, সিএজি-র কর্তারাও সেখানে হাজির ছিলেন। সেখানেই তৃণমূল কংগ্রেসের সুখেন্দুশেখর রায়, কংগ্রেসের শক্তিসিন গোহিল প্রশ্ন তোলেন, সিএজি যখন নিজেই বলছে, কেন্দ্র জিএসটি ক্ষতিপূরণের টাকা অন্যত্র খরচ করে জিএসটি আইন ভেঙেছে, সে ক্ষেত্রে আইন ভাঙার জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? তহবিল থেকে সরানো অর্থের কতটা ফেরত এসেছে? প্রশ্নের মুখে সিএজি কর্তারা বলেন, অর্থ মন্ত্রক সিএজি-র রিপোর্টের ভিত্তিতে কিছু জবাব পাঠিয়েছে। তার ভিত্তিতে আসন্ন বাদল অধিবেশনে একটি রিপোর্ট পেশ করা হবে।
জিএসটি চালুর সময়ই ঠিক হয়েছিল, রাজ্যগুলির নির্দিষ্ট পরিমাণ আয় না হলে কেন্দ্র পাঁচ বছর পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেবে। শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর বা বিলাসবহুল পণ্যে জিএসটি অতিরিক্ত সেস বসিয়ে তহবিল তৈরি হবে। তা থেকেই ক্ষতিপূরণ মেটানো হবে। সেস বাবদ আয় পুরো খরচ না-হলে তা তহবিলেই থেকে যাবে। সিএজি-র রিপোর্টে বলা হয়, জিএসটি চালুর পরে প্রথম বছর, ২০১৭-১৮-য় সেস থেকে আয় হয় ৬২,৬১২ কোটি টাকা। ক্ষতিপূরণ মেটানোর পরে কেন্দ্রের হাতে ৬,৪৬৬ কোটি টাকা থাকলেও তা তহবিলে জমা হয়নি। ২০১৮-১৯-এও ক্ষতিপূরণ মেটানোর পরে অতিরিক্ত ৪০,৮০৬ কোটি টাকা কেন্দ্র ক্ষতিপূরণ তহবিলে জমা করেনি। এই অর্থ কেন্দ্র অন্যত্র খরচ করে আইন ভেঙেছে বলে সিএজি অভিযোগ তুলেছিল। বিরোধীদের অভিযোগ, ওই অর্থই ভোটের আগে কেন্দ্রীয় সরকার সরকারি প্রচারে কাজে লাগিয়েছিল। অথচ পরে কোভিডের সময়ে সেস থেকে আয়ের তুলনায় রাজ্যগুলির ক্ষতিপূরণের চাহিদা বেশি হলে, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সেই দায় অস্বীকার করেন। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের অবশ্য বক্তব্য, যত ক্ষণ না হিসেবনিকেশ চূড়ান্ত হয় সরকার অস্থায়ী ভাবে ওই অর্থ নিজের হাতে রেখেছিল। তাতে আইন ভাঙা হয়নি।