সাদফ জাফর।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভের সময়ে এক জন প্রাক্তন শিক্ষিকা ও অভিনেত্রীকে গ্রেফতার করে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল যোগী আদিত্যনাথের পুলিশের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার লখনউয়ে নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে যে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছিল, তাতে যোগ দিয়েছিলেন অভিনেত্রী, প্রাক্তন শিক্ষিকা ও উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সাদফ জাফর। সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, গ্রেফতারের পরেই মারধর করা হয় তাঁকে। জাফরকে কোথায় রাখা হয়েছে, তা নিয়ে জানতে চেয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। জাফরের মুক্তির দাবিতে সরব হয়েছেন চিত্র পরিচালক মীরা নায়ার।
বিক্ষোভের সময় ফেসবুক লাইভে ছিলেন জাফর। সেই সময়ের কয়েকটি ভিডিয়ো এখন সামনে এসেছে। বিক্ষোভের মধ্যে থেকে কয়েকজন পুলিশের দিকে ঢিল ছুড়ছিল এবং হিংসা ছড়িয়েছিল বলে প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়। অথচ জাফরের একটি ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশের উদ্দেশে তিনি বলছেন, ‘‘আপনারা ওদের আটকাচ্ছেন না কেন? হিংসা হচ্ছে আর আপনারা চুপ করে দেখছেন। তা হলে হেলমেট পরে আছেন কেন?’’ পরের ভিডিয়োতে জাফর হেঁটে যাচ্ছেন। সেই সময়েই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জাফর পুলিশকে বলছেন, ‘‘আপনারা আমাকে গ্রেফতার করছেন কেন? যারা ঢিল ছুড়েছে, তাদের গ্রেফতার করছেন না কেন?’’ যোগীর পুলিশ অবশ্য জাফরের কথা শোনেনি।
যোগীর পুলিশের বাড়াবাড়ি নিয়ে যখন সবর হয়েছেন অনেকেই, তখন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা আজ আচমকাই পৌঁছে যান উত্তরপ্রদেশের বিজনৌরে। বিক্ষোভে শামিল হয়ে নিহত হয়েছেন সেখানকার দু’জন। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন প্রিয়ঙ্কা। বিক্ষোভ থামাতে যোগী সরকার স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের সমালোচনা করেন তিনি। কানপুর ও মেরঠেও দু’জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে আজ।
তবে উত্তরপ্রদেশে আজ হিংসার কোনও ঘটনা ঘটেনি। লখনউ, মেরঠ, ফিরোজাবাদ, কানপুর, বিজনৌরের পরিস্থিতি ছিল থমথমে। সোমবার পর্যন্ত ইন্টারনেট বন্ধ। বিক্ষোভকারীদের সম্পত্তি বিক্রি করে সরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি মেটানো হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করার পরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মুজফ্ফরনগরের অন্তত ৬০টি দোকান। শুক্রবার সেখানে হিংসার ঘটনা ঘটেছিল। কী ভাবে দোকানগুলির মালিকদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তা অবশ্য জানা যায়নি। পুলিশ কর্তাদের দাবি, বিক্ষোভকারীরা দোকানগুলির বাইরে জড়ো হয়েছিলেন। যোগীর নিজের এলাকা গোরক্ষপুরেও ভিডিয়ো ফুটেজ ও ছবি দেখে হিংসার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ৫০ জনকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এদের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজি ওপি মিশ্র জানিয়েছেন, বিক্ষোভ ঠেকাতে রাজ্যে ৮৭৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আগাম হেফাজতে নেওয়া হয়েছে ৫ হাজার জনকে। মামলা হয়েছে ১৩৫টি।