বিক্ষোভ রুখতে গুলি চালাতে উদ্যত পুলিশ। বৃহস্পতিবার, ম্যাঙ্গালুরুতে। ছবি: রয়টার্স
সিএএ-এনআরসির প্রতিবাদ-বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে প্রাণ গেল অন্তত তিন জনের। দু’জনের মৃত্যু হয়েছে কর্নাটকের ম্যাঙ্গালুরুতে। অন্য জন মারা গিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে। দুই শহরেই আহত বহু বিক্ষোভকারী ও পুলিশ কর্মী। ম্যাঙ্গালুরুতে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির জেরে রবিবার পর্যন্ত কার্ফু জারি করে ৪৮ ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। আংশিক ইন্টারনেট বন্ধ লখনউয়েও।
বৃহস্পতিবার কার্যত সকাল থেকেই প্রতিবাদ-বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ম্যাঙ্গালুরু। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে জমায়েত হতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ। চলতে থাকে স্লোগান-মিছিল। বেলা গড়াতেই সেই বিক্ষোভ উত্তাল হয়ে ওঠে। একাধিক থানায় হামলা চালানো, বাস-গাড়িতে ভাঙচুর চলে। যেখানেই বাধা দিতে গিয়েছে, আক্রান্ত হতে হয়েছে পুলিশকে। সন্ধে পর্যন্তও সেই উত্তাল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় পুলিশ গুলি চালায়। তাতে দু’জনের মৃত্যু হয়। পুলিশও মৃত্যুর খবর স্বীকার করেছে।
দু’জনের মৃত্যুর জেরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে আন্দাজ করেই শহরে জারি হয়েছে কার্ফু। শনিবার পর্যন্ত চার জনের বেশি জমায়েত করা যাবে না। পুরো শহরেই ইন্টারনেটও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ৪৮ ঘণ্টার জন্য। প্রথমে শনিবার পর্যন্ত কার্ফু জারি হলেও পরে তা রবিবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ম্যাঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার পি এস হর্ষ বলেন, ‘‘সারা শহরে কার্ফুর সময় বাড়িয়ে করা হয়েছে ২২ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত।’’ অন্য দিকে কর্নাটকের রাজধানী শহর বেঙ্গালুরুতেও প্রতিবাদ-বিক্ষোভে হয়েছে। পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার ভাস্কর রাও জানিয়েছেন, ‘‘শুক্রবার পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। এখনও পর্যন্ত ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে। বিধায়ক রিজওয়ান আর্শাদ এবং ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।’’
অন্য দিকে লখনউয়ে বৃহস্পতিবার সকালেই বড় জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। কিন্তু সে সব উপেক্ষা করেই রাস্তায় নেমে তীব্র প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শুরু করেন জনতা। শহরের একাধিক জায়গায় অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অন্তত ১০টি গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ করে, কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পুলিশের গুলিতে এক জনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। যদিও পুলিশ তা স্বীকার করেনি।
সিএএ-এনআরসির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ অষ্টম দিনে পড়ল। ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে গোটা দেশে। বৃহস্পতিবার অন্তত ৮টি রাজ্যের ১৩টি শহরে পথে নেমে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন সাধারণ মানুষ।